ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এনকাউন্টার করতে হলে অবশ্যই করব। গুলি আমরা গুনব। আর লাশ তোমরা গুনবে।’
শুক্রবার মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে দলীয় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি ওই মন্তব্য করেন বলে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে।
দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কোন রাজ্যের কোন সরকার এনকাউন্টার করেনি? পশ্চিমবঙ্গে এনকাউন্টার হয়নি? কিষেণজিকে তৃণমূল এনকাউন্টার করেনি? তাকে জঙ্গল থেকে তুলে নিয়ে এসে হত্যা করা হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে এনকাউন্টার হয় না, গুজরাটে হয়। এ রাজ্যে মানুষকে পরিসেবা দিয়ে হৃদয় জিততে হয়।’
তিনি বলেন, ‘কিষেণজি যখন মারা গিয়েছিলেন, তখন জঙ্গলমহলে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। এনকাউন্টারে তার মৃত্যু হয়নি। এখন মাওবাদী-বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস এক হয়েছে। তাও উনি এসব বলছেন।’
শুক্রবার দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বিজেপি জঙ্গি পার্টি? যদি জঙ্গি হয়ে যায়, দু’দিনে তাহলে আপনার সুখের সংসার উজাড় করে দেবো, সুখের কাথায় আগুন দিয়ে দেবো, খাওয়া ঘুম তুলে দেবো আপনার।
তিনি বলেন, ‘কোলকাতা থেকে একটা মন্ত্রীকেও বেরোতে দেবো না। এমন ঠেঙাবো প্যান্ডেল বাধার জায়গা পাবেন না কোথাও। হাসপাতালে জায়গা হবে না। ডিসেম্বরের মধ্যে না সুধরালে সবকটাকে পালিশ করে সোজা করে দেবো।’
বৃহস্পতিবার কোলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের বর্ধিত কোর কমিটির সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে টার্গেট করে বলেছিলেন, ‘রাজ্যে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে বিজেপি। আসলে এটি জঙ্গি সংগঠন। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলাই তাদের লক্ষ্য।’
মমতার ওই বক্তব্যের পরই শুক্রবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের হুমকি মন্তব্য প্রকাশ্যে এল।
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাস ও পুলিশি নির্যাতন’-এর প্রতিবাদে গত সোমবার থেকে আগামী রোববার পর্যন্ত জেলায় জেলায় প্রশাসনিক দফতরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিজেপি।
এদিকে, দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুও এনকাউন্টারের হুমকি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সিউড়ি প্রশাসনিক ভবনের সামনে দেয়া ভাষণে তিনি বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশের যোগি আদিত্যনাথ সরকারের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৭২ ঘণ্টা সময় দেবে মহিষাসুরকে। হয় দোষ স্বীকার করো, না হয় এনকাউন্টারের মুখোমুখি হও। যেমন হচ্ছে যোগি রাজ্যে।’
সম্প্রতি বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জলপাইগুড়িতে এক সভায় তৃণমূলের নেতাদের এনকাউন্টারে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন।