ব্রেকিং নিউজ
Home / অপরাধ জগৎ / রাজন হত্যাকান্ড: ২২ গ্রামের বৈঠক, ১২ ঘন্টার আলটিমেটাম

রাজন হত্যাকান্ড: ২২ গ্রামের বৈঠক, ১২ ঘন্টার আলটিমেটাম

বর্তমানে সিলেটের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হলো ১৩ বছরের শিশু সামিউল আলম রাজনের নৃশংস হত্যাকান্ড। 

সিলেটে বর্বরোচিত নির্যাতনের মাধ্যমে ১৩ বছরের শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যাকান্ডের ঘটনায় নির্যাতনকারী ঘাতকদের ১২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের আলটিমেটাম দিয়েছেন স্থানীয় ২২ গ্রামবাসী। রোববার দিবাগত রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত টানা দুই ঘন্টার বৈঠক শেষে স্থানীয় এলাকাবাসী এই আলটিমেটাম দেন।

সিলেট নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডের পাশে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদে আলী গ্রামে নিহত সামিউলের বাড়ির উঠোনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সামিউল হত্যাকান্ডের ঘটনায় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে ওই এলাকার ২২ গ্রামের মুবব্বি ও যুবকরা এ বৈঠকে বসেন।

বৈঠকে বাদেআলী, অনন্তপুর, পাইকারগাঁও, ইনাথাবাদ, খানুয়া, হাজরাই, হকলামপুর, তাজপুর, দিঘীরপার, বসন্তরাগাঁও, গোস্তরগাঁও, পূর্বদর্শাগাঁও, পশ্চিমদশা গাঁও, মেদিনিমহল, সুজাতপুর, বাছিরপুর, মীরগাঁও, মইয়ারচর, কুমারগাঁও, নোয়াকুরুখলা, সোনাতলা ও বাওনপুর গ্রামের মুরব্বিরা উপস্থিত ছিলেন।

পশ্চিমদশা গাঁওয়ের মুরব্বি আশফাক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাদেআলী গ্রামের লিয়াকত আলী মাসুক, সমসের আলী, আকরম আলী মাসুক, ফারুক মিয়া, মো. আলী দুদু মিয়া, আবদুল মালিক, অনন্তপুর গ্রামের মুরব্বি আবদুজ জাহির মেম্বার, জসিম মিয়া, আবদুল মছব্বির, পূর্বদশা গাঁওয়ের আবদুল মনাফ, বাছিরপুর গ্রামের আবদুল মতিন, মীরগাঁওয়ের তেরা মিয়া মেম্বার, বসন্তরগাঁওয়ের শামসুল হক, মেদিনিমহল গ্রামের আবদুল হাসিম, দিঘীরপার গ্রামের শাবাজ আলী, পাইকারগাঁও গ্রামের আবদুল কাদির, সাজিদ মিয়া, ইনাথাবাদ গ্রামের আলতা মিয়া, তাজপুর গ্রামের সায়েদ আহমদ প্রমুখ।

বৈঠকে আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যে সামিউল হত্যাকান্ডে জড়িত সকল আসামিকে গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের প্রতি আলটিমেটাম দেয়া হয়। অন্যথায় গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে প্রশাসনকে হুশিয়ার করে দেয়া হয়।

এদিকে ২২ গ্রামবাসীর বৈঠকের খবর পেয়ে নগরীর জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন বাদেআলী গ্রামে উপস্থিত হন। তিনি সামিউল হত্যাকারীদের গ্রেফতারে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করা হবে বলে এলাকাবাসীকে আশ্বস্থ করেন।

উলে­খ্য, গত বুধবার সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে সামিউলকে চুরির মিথ্যা অপবাদে খুঁটির সাথে বেঁধে পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে সামিউল মারা গেলে তার লাশ গুম করার চেষ্টাকালে পুলিশের হাতে আটক হয় মুহিদ আলম।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে নগরীর জালালাবাদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় আটক মুহিদ আলম (২২) ও তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়েছে।

নিহত সামিউল আলম রাজনের বাড়ি সিলেট নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডের পাশে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদে আলী গ্রামে। সামিউলের বাবা শেখ আজিজুর রহমান পেশায় একজন প্রাইভেটকারচালক। তার দুই ছেলের মধ্যে সামিউল বড়। অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা সামিউল সবজি বিক্রি করত।

2 comments

  1. It is horrible. We want arrest them. And hang them up on public road.

  2. জহিরুল ইসলাম

    এর চাইতে নির্মম, বর্বর, অমানবিক কিছুই
    হতে পারে?
    এই শিশুর আত্মা সমগ্র বাংলাদেশকে
    অভিশাপ দিতে থাকবে,
    প্লিজ আপনার বিচার করুন,
    না হলে প্রাচীন কোন জাতির মত
    আমাদের ভাগ্যে নির্মম কিছু অপেক্ষা
    করছে,
    ওই জালিমদের প্রাকাশ্যে সাজার
    ব্যবস্থা করা হউক।
    প্লিজ ক্ষমতাবানরা আপনারা চুপ
    থাকবেন।
    ছেলেটি পানি খেতে চেয়েছিল,
    তাকে ঘাম খেতে দেওয়া হল,
    এর চেয়ে নির্মমতা আর কি হতে
    পারে?
    ১৬ কোটি মানুষ এই ১৩ বছরের ছেলেটির
    কাছে হেরে যেতে পারে না।
    খোদার কসম হেরে যেতে পারে না।
    আপনারা এর বিচার করুন।
    না হলে আল্লাহ, ভগবান, ঈশ্বর আমাদের,
    আপনাদের, ১৬ কোটি মানুষকে ক্ষমা
    করবে না। খোদার কসম ক্ষমা করবে না।
    ধন্যবাদ গ্রামের ওই ২২ জন মুরুব্বীকে।