মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি কুলাউড়ার সাবেক এমপি এম এম শাহীনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দিয়েছে কুলাউড়া থানা পুলিশ। সম্প্রতি পুলিশ এম এম শাহীনসহ বিএনপি ও তার অঙ্গংগঠনের ৪৪ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এ চার্জশীট প্রদান করে।
জানা যায়, বিগত ৫ জানুয়ারী ছিল বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত গনতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে কর্মসূচী। কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে কুলাউড়ার সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন এর নেতৃত্বে এক বিশাল কালো পতাকা মিছিল উত্তরবাজার থেকে শুরু শহর প্রদক্ষিন করে চৌমুহনীতে আসা মাত্রই পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এবং পুলিশ হঠাৎ করে শান্তিপূর্ন কালো পতাকা মিছিলের ওপর টিয়ারশেল,রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে মিছিলটি ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। এসময় এম এম শাহীনসহ ১০/১২ জন বিএনপির নেতাকর্মী আহত হন। এ ঘটনায় কুলাউড়া থানা পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা রুজু করে। মামলার এজাহারে এম এম শাহীনের নাম ছিলনা। কিন্তু ঘটনার ৬ মাস পর আক¯িœকভাবে পুলিশ কুলাউড়ার জনপ্রিয় সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা এম এম শাহীনের নাম অর্ন্তভূক্ত করে মামলার চার্জশীট গত ৩০ জুন আদালতে প্রেরন করে । চার্জশীটে এম এম শাহীনসহ বিএনপির কুলাউড়া উপজেলা শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি জয়নাল আবেদিন বাচ্ছু,উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক বদরুজ্জামান সজল,যুগ্ন সম্পাদক সৈয়দ তফজ্জুল হোসেন তফই,সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ময়েজ উদ্দিন আকলসহ মোট ৪৪ জনকে মামলার চার্জশীটে আসামী করে আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট প্রেরন করে পুলিশ।
এদিকে ৫ জানুয়ারী বিএনপির গনতন্ত্র হত্যা দিবসের কর্মসূচীতে শান্তিপূর্ন কালো পতাকা মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ,টিয়ারশেল নিক্ষেপের ঘটনায় এম এম শাহীনকে পুলিশের বাদী হয়ে করা চার্জশীটে অর্ন্তভুক্ত করায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ এলাকার ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ। ২০ দলীয় জোটের নেতা কর্মীরা জানান, ৫ জানুয়ারী বিএনপির কুলাউড়ায় অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কালো পতাকা মিছিল চলছিল। কিন্তু পুলিশই হঠাৎ করে মিছিলের ওপর চড়াও হয় এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও রাবারবুলেট নিক্ষেপ শুরু করে এবং ব্যাপক লাটিচার্জ করে। এসময় পুলিশের তান্ডবে বিএনপির নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন মার্কেটে গিয়ে আশ্রয় নিলেও পুলিশ মার্কেটের ভিতরে গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বেড়ধড়ক পেটায় এবং অনেককে টেনে হিছড়ে থানায় নিয়ে আটকে রাখে। শুধু তাই নয় পুলিশ এসময় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্টানও ভাংচুর করে। এবং উল্টো এ ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ এসল্ট মামলা গ্রহন করে। এমনকি ৫ জানুয়ারীর পর বিএনপি প্রকাশ্যে কোন কর্মসূচী পালন করতে পারেনি পুলিশী ভয়ে। মামলা রুজু করার পর পুলিশ বেপরোয়া হয়ে উঠে। এমনকি যৌথবাহিনীর অভিযানও চলে বেশ কিছু দিন। যৌথবাহিনীর অভিযানে বিএনপির তথা ২০দলীয় জোটের অনেক নেতাকর্মী আটক হন এবং অনেকেই বাসা বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে বেড়ান।
এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওয়াসিমুলবারী ও এসআই ফরিদুজ্জামান মামলা রুজু করার ৬ মাস পর ৩০ জুন মৌলভীবাজার আদালতে মামলার চুড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে।