সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, ভারত সরকারের অনুদানে সিলেট নগরী পায় ৩টি উন্নয়ন প্রকল্প। এর মধ্যে দুটি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হলেও করোনা মহামারির কারণে ধোপাদিঘীরপাড়ের সৌন্দর্যবর্ধন কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি।
এই প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে এবং চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর আরামবাগ এলাকার একটি কনভেনশন হলে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরেন মেয়র আরিফ। ৮৩৯ কোটি ২০ লাখ ৭৬ হাজার টাকার ঘোষিত নতুন বাজেটে আয় ও ব্যয়ের পরিমাণ সমান দেখানো হয়েছে।
জানা যায়, সিলেট নগরীর ধোপাদিঘীর সৌন্দর্যবর্ধন ও দখলদারদের উচ্ছেদে ২০১৮ সালে উদ্যোগ নেয় সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। সে সময় উচ্ছেদ করা হয় দিঘী দখল করে গড়ে ওঠা বেশকিছু স্থাপনা। চারদিকে স্থাপনার কারণে প্রায় ঢাকা পড়ে যাওয়া ধোপাদিঘী ওই অভিযানের ফলে কিছুটা দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। যা প্রশংসা কুড়ায় নগরবাসীর।নগরবাসীর বিনোদনের কথা চিন্তা করে পরবর্তীতে ধোপাদীঘিকে নান্দনিক রূপ দেওয়ার কাজ শুরু করে সিসিক।
সিসিকের প্রকৌশল শাখা জানায়, ধোপাদীঘির আকার ছোট হবে না। বরং নোংরা দুর্গন্ধময় পরিত্যক্ত এই দীঘিকে অপরূপ সৌন্দর্য্যে দৃশ্যমান করে তোলা হবে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ধোপাদিঘীতে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এতে অর্থায়ন করে ভারতীয় সরকার। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ২১ কোটি ৮৫ লক্ষ ৬০ হাজার ৫শ টাকা।
সিসিক জানায়, দীঘির চারদিকে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। বসার জন্য থাকবে বেঞ্চ। শিশুদের জন্য রাইডের জায়গা থাকবে। পুকুরে নামার জন্য থাকবে দুটি দৃষ্টিনন্দন ঘাট। পুকুরের নোংরা পানিকে পরিস্কার করা হবে এবং সেই সাথে পুকুরের মধ্যে ঘোরার জন্য থাকবে প্যাডেল বোট। বৃক্ষপ্রেমীদের পরামর্শে সুদৃশ্যভাবে লাগানো হবে সবুজ বৃক্ষ। পুকুরের মধ্যখানে থাকবে নৌকার আদলে ভাসমান রেস্তোরা।
থাকবে একাধিক টয়লেট। এসব টয়লেট ও বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার জন্য থাকবে আলাদা পাইপলাইন, যা পুকুরের পানির সাথে সংযোগ থাকবে না। সবার জন্য উন্মুক্ত এই জায়গাটির প্রবেশপথ থাকবে সিটি কর্পোরেশনের মসজিদের উত্তরপাশ দিয়ে এবং মহানগরবাসী সকাল-বিকেল ও সন্ধ্যায় যাতে এখানে এসে হাঁটতে পারেন সেজন্য রাতের বেলা আলোকিতকরণসহ সংশ্লিষ্ট সকল সুবিধা রাখা হবে।
সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে আমার একটি স্বপ্ন ছিল সিলেট মহানগরবাসীর হাঁটাচলার জন্য একটি নির্মল পরিবেশের স্থান গড়ে তোলা। যেখানে নগরবাসী কিছুটা সময় নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে উপভোগ করবেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ধোপাদীঘিকে কেন্দ্র করে এই রকম একটি আবহ তৈরি করা হচ্ছে।’
এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দীঘিটির পুনরুজ্জীবিত হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।