অনলাইন টিভি ক্লাব ইউকে আয়োজিত ‘মানব সেবায় মিডিয়ার ভূমিকা’ শীষর্ক আলোচনায় লন্ডন বাংলা ও এলবি২৪ -এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক শাহ ইউসুফ’কে বৃটেনে বাংলা অনলাইন টিভির পথিকৃৎ আখ্যায়িত করে বলা হয়, শাহ ইউসুফই সর্বপ্রথম অনলাইনের যাত্রাপথে আমাদের সিপাহসালার ও পথপ্রদর্শক। ২০০৭ সালে ফেসবুক আসারও আগে শাহ ইউসুফ লন্ডন বাংলার মাধ্যমে অনলাইনে সংবাদ পরিবেশনের কর্মযজ্ঞ শুরু করেন।
অনুষ্ঠানে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি মহিব চৌধুরী বলেছেন, সাংবাদিকতা একটি মূল্যবোধ সম্পন্ন মহান পেশা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাংবাদিকেরা সর্বাগ্রে প্রতিবাদী ভুমিকা পালন করে থাকেন। চলমান ঘটনা প্রবাহের পাশাপাশি মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সেবা ও সাম্যের কথা তুলে ধরা আমাদের কাজ।
আরটিএন বাংলা টিভির সিইও নুরুল আমিন তারেকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমএএইচ টিভির সিইও আবদুল হামিদ টিপু। ২৪ আগস্ট বেলা ৬টায় পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপল সোনারগাঁও মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় আরো অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ব্যারিস্টার ও কাউন্সিলার নাজির আহমদ, সময় সম্পাদক কবি ও কথাসাহিত্যিক সাঈদ চৌধুরী, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা আশিকুর রহমান আশিক, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ইভেন্ট সেক্রেটারি চ্যানেল এস’র রেজাউল করিম মৃধা, টিভি ওয়ান’র সিনিয়র রিপোর্টার জাকির হোসেন কয়েস, এটিএন বাংলার আবু সুফিয়ান প্রমুখ। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করবেন সুয়াইবুর রাহমান লায়েক।
আলোচনায় অংশগ্রহন করেন এলবি২৪-এর সাবেক হেড অব নিউজ আলাউর খান শাহীন, এমএস টিভির চেয়ারম্যান মুসলিম খান, আল আরাফাহ টিভির সিইও আনোয়ার হোসেন, সিলেটি অনলাইন টিভির সিইও আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, টিভি প্রেজেনটার ও সাংবাদিক জয়নুল আবেদীন, কমিউনিটি সংগঠক শরিফুল ইসলাম, ওসমানী স্মৃতি পরিষদের সেক্রেটারি জামাল খান, এমএসটিভির সাইফুর রহমান পারভেজ ও তরিকুল ইসলাম, আরটিএন বাংলা টিভির বুরহান উদদীন চৌধুরী ও বিএমএম তামজিদ, মুক্ত বাংলা টিভির তরিকুল ইসলাম, তাহমিদ হোসেন খান ও রায়হান উদদীন, এমএস টিভির ফারিয়া আক্তার সুমি ও মোঃ আরজানুজ জামান।
বিভিন্ন মিডিয়া থেকে অংশ গ্রহন করেন মোঃ রমজান সরদার রানা, ফয়ছল আহমদ, আলী উজ্জ্বল, ইকবাল হোসেন, সুয়াইবুর রাহমান, শাহীন আহমদ, মোঃ আমিনুল ইসলাম সফর, মোঃমাহবুবুর রহমান, ছালাম হুসাইন, মোঃ ফাহাদুজ্জামান, চৌধুরী তাহমিনা রহমান, সেবুল আহমদ, বুরহান উদদীন, জহুরুল ইসলাম, খালেদ হুসাইন, ছাবের আহমদ, মোঃ নজরুল ইসলাম, মশিউর রহমান, মোহাম্মদ আলী, আবদুল কাদের জিলানী, মঈনুল ইসলাম, তারেক হাছান, লিয়াকত আলী, আবদুল হামিদ, মোঃসুহেল আহমদ, আনোয়ার হোসেন, আলম আহমদ, আরিফ আহমদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে এলবি২৪ ও লন্ডন বাংলার সিইও শাহ ইউসুফ বলেন, বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। টেকনলোজিতে যিনি অভিজ্ঞ, পুরো পৃথিবী তার হাতের মুঠোয়। কেউ আগে আসলে বেশি জানবেন বা পরে আসলে জানবেন না – এমনটা নয়। আপনাদেরকে লেগে থাকতে হবে এবং অধ্যাবসায়ই আপনাকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমি সব সময় নেপথ্যে থাকতে পছন্দ করি, আমার কাজ বিহাইন্ড দ্য ক্যামেরা, এজন্য আমি অপরিচিত থেকে যাবার প্রত্যাশা লালন করে যেতে পারি। নিজেকে জাহির করতে গেলেই আপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মার খেতে পারে।
সভায় বক্তারা বলেন, অনলাইন মিডিয়া বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকতাকে সমৃদ্ধ করছে। অনলাইন চ্যানেলগুলো সংবাদ পরিবেশন বা উপস্থাপনার ক্ষেত্রে নতুনত্ব আনছে। যে খবর মুহুর্তের মধ্যে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।
বক্তারা মিডিয়ার মাধ্যমে মানব সেবার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, মানবকল্যাণে জীবনে সার্থকতা খুঁজে পাওয়া যায়। অতীতে যারাই সেবাকর্মে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন, তারা অমর হয়ে আছেন। এখনো সাংবাদিকেরা করোনা মহাদূর্যোগের মধ্যেও পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন। অসহায় রোগীদের সহায়তায় সরকার, এনএইচএস এবং বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করছেন।
ক্লাবের কার্যক্রমের ভূয়সি প্রশংসা করে বক্তারা বলেন, অনলাইন টিভি ক্লাব আয়োজিত অনুষ্ঠানটি খুবই সময় উপযোগী। পেশাগত ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আপনাদের প্রয়াস সফল হোক। সামাজিক কাজে মানবতার কল্যাণে ভূমিকা রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা জানি মানবতার সেবা মন ও আত্মাকে পবিত্র এবং পরিশুদ্ধ করে।
সংবাদিকতায় জড়িতদের প্রশিক্ষণের গুরুত্বারোপ করে বক্তারা বলেন, আপনারা যে রিপোর্টগুলো প্রোডিউস করছেন, সেখানে রিয়েলিটির বা গণমানুষের সাথে তথা সমাজের বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে যেন দূরত্ব তৈরি না করে। বস্তুনিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে হবে। বায়াস্ড নিউজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পেশাদারিত্বের যে নৈতিক মানদণ্ড রয়েছে, সেই মানদণ্ডগুলো যদি অনুসরণ করা হয়, তাহলে আমাদের মিডিয়া অবশ্যই সাধারণ মানুষের চাহিদা পুরণ করতে সক্ষম হবে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে সকলের সহায়তা কামনা করে বলা হয়, সফল লেখক-সাংবাদিকেরা সৃষ্টির সেবায় ও মানবতার জয়গানে জীবন উৎসর্গ করেন। দরিদ্র, অভাবী ও অক্ষম জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তার কথা যথার্থ ভাবে তুলে ধরাকে কর্তব্য মনে করেন। আসুন, আমরা সবাই মানব সেবার মহান আদর্শে উদ্বুদ্ধ হই এবং সর্বদা নিয়োজিত থাকি মানবতার কল্যাণে।