১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার এবং পেন্টাগনে সন্ত্রাসী হামলার ১৪ বছর পর ঠিক একই দিনে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে নাম উঠে এসেছে ওসামা বিন লাদেনের পরিবারের।
মসজিদ আল হারামে বিধ্বস্ত হওয়া ক্রেনটির মালিক সৌদি আরবের ধনাঢ্য বিন লাদেন পরিবার।জার্মানির তৈরি ক্রেনটি বিন লাদেন পরিবারের মালিকানাধীন নির্মাণ সংস্থা বিন লাদেন গ্রুপ দ্বারা পরিচালিত হতো।
পবিত্র মসজিদ সম্প্রসারণের দায়িত্ব পেয়েছিলো বিন লাদেন গ্রুপ। মসজিদ আল হারামের আয়তন বাড়িয়ে ৪.৩ লাখ বর্গফুট করার উদ্দেশ্যে ১৪ বিলিয়ন পাউন্ডের বিশাল এই নির্মাণযজ্ঞ দুই বছর ধরে এই কোম্পানিটির নেতৃত্বে পরিচালিত হয়ে আসছে।
এর ফলে মসজিদটিতে একই সময়ে ২২ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
বর্তমান সৌদি শাসক আল সৌদ পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্কের খাতিরে সৌদি আরবের বেশিরভাগ নির্মাণকাজের দায়িত্ব পেয়ে থাকে বিন লাদেন পরিবারের মালিকানাধীন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই মসজিদ আল হারামের সম্প্রসারণের দায়িত্বও পায় বিন লাদেন পরিবার। তবে ক্রেনটির সুনির্দিষ্ট মালিকের সঠিক পরিচয় এখনও পরিস্কার হয়নি।
আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের ধনকুবের পিতা মোহাম্মদ বিন লাদেন গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। তবে ১৯৯০ সালের পর এই পরিবার ওসামার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে।
শুক্রবার প্রবল ঝড়ের পর ক্রেনটি মসজিদের পূর্ব পাশে ভেঙ্গে পড়ে। এর ফলে ১০৭ জন নিহত এবং ২৩৮ জন আহত হন। গত কয়েকদিন ধরে চলা বালুঝড় এবং ঘটনার দিন তীব্র ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার পরও বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা ক্রেনগুলো সরানো হয়নি।
এদিকে এই দুর্ঘটনার পর সৌদি কর্তৃপক্ষের ব্যাপক সমালোচনা করেন মক্কাভিত্তিক ইসলামিক ঐতিহ্য গবেষণা ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইরফান আল-আলাউয়ি।
তিনি এজন্য কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করে বলেন, এরা ঐতিহ্য, স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল করে দেখে না। ক্রেন ভেঙ্গে মানুষ মৃত্যুর এই ঘটনাকে বোমা মেরে মানুষ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।
আলাউয়ি মক্কার পবিত্র স্থাপনাগুলির পুনঃসংস্করণের ঘোর বিরোধী। তার মতে, এর ফলে মহানবী হজরত মুহাম্মদ(সা.)এর স্পর্শধন্য স্থাপনাগুলো বর্তমান শাসক সরিয়ে দিচ্ছে।
শুক্রবার রাতে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মসীহ বলেছেন, আহত হয়েছেন ৪০ বাংলাদেশী। গত রাতে মক্কা থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের হজ সংক্রান্ত কনসাল জহিরুল ইসলাম বিবিসিকে বলেছেন, আহতদের মধ্যে ২৯ জন বাংলাদেশী হজযাত্রী আছেন। তাদের মধ্যে একজন ছাড়া কেউ গুরুতর আহত হননি। তবে তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।