ব্রেকিং নিউজ
Home / প্রচ্ছদ / প্রখ্যাত সাংবাদিক সিরাজুর রহমান আর নেই

প্রখ্যাত সাংবাদিক সিরাজুর রহমান আর নেই

Sirajur Rahman০১ জুন ২০১৫: প্রখ্যাত সাংবাদিক বিবিসি বাংলা বিভাগের সাবেক উপ-প্রধান সিরাজুর রহমান আর নেই। চিকিৎসাধীন অবস্থায় লন্ডনের রয়েল ফ্রি হাসপাতালে তিনি আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৫টা) ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ফুসফুসের রোগে ভুগছিলেন।

বাংলা ভাষায় সাংবাদিকতা জগতের এই উজ্বল নক্ষত্রের জন্ম ১৯৩৪ সালে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার লক্ষ্মীপুরে। বিবিসি বাংলা বিভাগে দায়িত্ব পালনকালে তিনি এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ইন্তেকালের সময় তিনি স্ত্রী সোফিয়া রহমানকে রেখে গেছেন। তার এক পুত্র ও কন্যা আগেই ইন্তেকাল করেন।

বিবিসি খ্যাত সিরাজুর রহমানের কণ্ঠস্বর বাংলাভাষাভাষী রেডিও শ্রোতার অতি পরিচিত। ‘সিরাজুর রহমান বলছি- লন্ডন থেকে’ তার এ কণ্ঠস্বর বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। ৩৪ বছর তিনি বিবিসি বাংলা বিভাগে কাজ করেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মানুষ তার মুখে খবর শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতো। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক ঘটনার সাক্ষী। মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে এ দেশের রাজনৈতিক নেতাদের সাথে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিলো।

তিনি বিবিসি থেকে অবসর নেন ১৯৯৪ সালে। এরপর থেকে তিনি সংবাদপত্রে কলাম লেখা শুরু করেন। জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক বিষয়ে লিখতেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি নয়াদিগন্তে নিয়মিত কলাম লিখেছেন। সিরাজুর রহমানের পিতা মাওলানা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ছিলেন কলকাতা আলিয়া মাদরাসার শিক্ষক। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তিনি পরিবারের সাথে ঢাকা ফেরেন। কলকাতাতে মেট্রিক পরীক্ষার আগেই সাংবাদিকতা শুরু করেন। দেশে ফেরার পর ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। এ সময় তিনি ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় সঙ্গীতের অফিসিয়াল যে মিউজিকটি বাজানো হয় তা তৈরির পেছনে মূল ভূমিকা রাখেন সিরাজুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সংবাদ তার কণ্ঠেই প্রচার করেছিলো বিবিসি।

সিরাজুর রহমান স্বপরিবারে নর্থ লন্ডনের হেনডন এলাকায় থাকতেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিলেন। ২০১১ সালে ছেলে সাইফুর রহমান ও ২০০২ সালে মেয়ে নাজনিন রহমান মারা যান। এরপর তিনি দুই নাতি তানভির রহমান ও ছল রহমানকে নিয়ে একই বাসায় থাকতেন।