তাঁর অধিনায়কত্বেই ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন এক যুগের সূচনা হয়েছিল। তাঁর আমলেই বেটিং কেলেঙ্কারিতে জীর্ণ একটা দল শিখেছিল, পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক না কেন, লড়াইটা চালিয়ে যেতেই হয়। চেষ্টা করলে বিদেশের মাটিতেও জয় ছিনিয়ে আনা যায়, শিখিয়ে ছিলেন তিনিই। এক ঝাঁক তরুণ প্রজন্মের ক্রিকেটাররা তাঁর নেতৃত্বেই সমৃদ্ধ করেছিল ভারতের ক্রিকেটের ইতিহাস। তিনি সৌরভ গাঙ্গুলি। জল্পনা চলছে, সম্ভবত আরও একবার ভারতীয় ক্রিকেট দলের হাল ধরতে চলেছেন তিনি। তবে এবার কোচের ভূমিকায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি খবর অনুযায়ী, সিএবি সূত্রে জানা গেছে এই নিয়ে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার সঙ্গে এক প্রস্থ কথা হয়েছে সৌরভের। ডানকান ফ্লেচারের পর ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হতে রাজি তিনি। ডালমিয়াকে জানিয়েছেন ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপের পরেই ডানকান ফ্লেচারের কোচ হিসেবে সময়সীমা ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে।
”ক্রিকেটার সৌরভের কৃতিত্ব প্রশ্নাতীত। ক্রিকেট খুঁটিনাটি নিয়ে তাঁর কৌশলী দূরদৃষ্টিও তুলনাহীন। কিন্তু কোচের পদের জন্য তাঁকে আগে আবেদন করতে হবে।” সংবাদপত্রটিকে জানিয়েছে সিএবি সূত্র। ”ওনাদের মধ্যে (ডালমিয়া ও সৌরভ) এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে ডালমিয়া সৌরভকে নিশ্চিত কোনও আশ্বাস দেননি।” খবর একই সূত্রে।
বিসিসিআই-এর নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে কোচ হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের আবেদন করতে হয়। দিতে হয় প্রেসেন্টেশন। এরপর বোর্ড কর্তা ও প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়কদের একটি দল ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে কোচকে নির্বাচিত করেন।
এই নিয়ে অবশ্য ডালমিয়া মুখ খুলতে রাজি হননি। শুধু বলেছেন ”দিন দশেক অপেক্ষা করুন। তারপরেই সবকিছু জানতে পারবেন।”
কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে বোর্ড কর্তাদের একাংশ আর এক প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়কে কোচ হিসেবে চাইছে। যে সূত্রের কাছ থেকে গাঙ্গুলির খবর পাওয়া গেছে, সেই একই সূত্রের দাবি ”ভারতীয় ক্রিকেটে দ্রাবিড় অত্যন্ত সম্মানীয়। রাজস্থান রয়্যালসের মেন্টর/ কোচ হিসেবে দারুণ কাজ করেছেন তিনি। আমরা এমন একজন কোচ চাই যিনি ভারতের ইয়ং ব্রিগেডকে পথ দেখাবেন…দ্রাবিড় অন্যতম সেরা প্রার্থী। তবে গাঙ্গুলির মত তাঁকেও নিজে থেকে আবেদন জানাতে হবে।”
তবে সূত্রে খবর কোচের দৌড়ে এছাড়াও আছেন অনেকেই। আছেন অধুনা টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রীও। অনেকে আবার হাই প্রোফাইল কোচের বদলে, সঞ্জয় বাঙ্গারের মত তুলনামূলক কম পরিচিত কাউকে কোচ হিসেবে চাইছেন। সে ক্ষেত্রে দলের রাশটা প্রকৃত অর্থে রয়ে যাবে টিম ডিরেক্টরের হাতেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড কর্তা জানিয়েছেন ”অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরপর চারটে ম্যাচ হেরেছি আমরা। আর আপনারা বলছেন দল নাকি ভালই খেলছে। আমরা পারফর্মেন্সের আমূল পরিবর্তন চাই। টেস্ট ক্রিকেটের গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা দেখতে চাই পারফর্মেন্স ভাল করার জন্য নয়া কোচের ঝুলিতে কী কী পরিকল্পনা রয়েছে। ভারত বিশ্ব ক্রিকেটে রাজত্ব করে। আমরা নিজেদেরকে হাসির খোরাক করতে চাই না।”
আগামী ২৬ এপ্রিল বিসিসিআই-এর বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।