ব্রেকিং নিউজ
Home / বাংলাদেশ / ক্রসফায়ারে নিহত ৪

ক্রসফায়ারে নিহত ৪

image ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে ৪ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গতকাল দিবালোকে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এছাড়া গত শুক্রবার রাতে সুন্দরবনের করমজল এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন বনদস্যু সিরাজ বাহিনীর প্রধান সিরাজ শিকদার। অন্যদিকে গতকাল সকালে সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা হত্যার মামলার আসামি আরেক বিএনপিকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
যাত্রাবাড়ীতে দিবালোকে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই যুবক নিহত
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সুতিখালপাড় বালুর মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন- মো. সালাউদ্দিন (৩৫) এবং জুয়েল আহমেদ (২৭)।
পুলিশের দাবি, তারা দুজনই বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে যাত্রাবাড়ী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, নিহত দুই যুবক দুপুর ১টায় কাজলা নয়ানগর এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি রিভলবার, দুই রাউন্ড গুলি ও একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাদের নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য সুতিখালপাড় নামক স্থানে যায় পুলিশ। এ সময় আগে থেকে সেখানে ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করা শুরু করে। তখন পুলিশও গুলিবর্ষণ করে। উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় ১৩ মিনিট বন্দুকযুদ্ধ হয়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। তখন মধ্যখানে ওই দুজন সন্ত্রাসী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলে নিহত হয়। তবে এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী নেই বলে তিনি জানান।
তিনি আরও দাবি করেন, বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের এক এসআইসহ তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত দুজন স্থানীয় সন্ত্রাসী। তাদের নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের অনেক দিন ধরে পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছিল। কিন্তু, তারা পুলিশের গ্রেফতারি থেকে বাঁচার জন্য গাঢাকা দিয়েছিল।
ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, কয়েকমাস আগে তারা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। পরে তারা জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পায়। মুক্তি পেয়ে তারা আবার ছিনতাই ও ডাকাতির কাজে জড়িয়ে পড়ে। নিহতদের সহযোগীদের গ্রেফতার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। খুব শিগগিরই তাদের অন্য সহযোগীদের গ্রেফতার করা হবে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। সালাউদ্দীনের গ্রামের বাড়ি
কুমিল্লা জেলায় ও জুয়েলের গ্রামের বাড়ি নায়ারয়ণগঞ্জ এলাকায় বলে জানা গেছে।
সুন্দরবনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সিরাজ বাহিনীর প্রধান নিহত
খুলনা অফিস জানায়, সুন্দরবনের করমজল এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বনদস্যু সিরাজ বাহিনীর প্রধান সিরাজ শিকদার নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় করমজল পর্যটন স্পট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার বনের গহীনে পুলিশের অভিযানকালে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর খুলনার পাইকগাছা থানায় একটি ডাকাতি মামলায় সন্দেহভাজন কয়েকজন আসামি ডাকাতির সঙ্গে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। ওই সময় তারা তাদের বাহিনীর প্রধান সিরাজ শিকদারের নাম প্রকাশ করেন।
এরপর তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী তদন্তকারী কর্মকর্তা পাইকগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল বৃহস্পতিবার রাতে সিরাজ শিকদারকে গ্রেফতার করতে পাইকগাছার পার্শ্ববর্তী বাগেরহাট জেলার রামপালে তার বাড়িতে অভিযান চালায়।
গতক শুক্রবার ভোরে রামপাল উপজেলার তুজুলপুর গ্রামে তাকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ওই বাড়ি থেকে ডাকাতির কিছু গহনা উদ্ধার করা হয়।
পরে সিরাজের দেয়া তথ্য অনুযায়ী খুলনা ও বাগেরহাট শহর থেকে আরও ৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়।
অভিযানের একপর্যায়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সিরাজ জানান, দাকোপ থানার সুন্দরবনের করমজল এলাকায় তার বাহিনীর অস্ত্র রয়েছে। তাকে নিয়েই গত শুক্রবার বিকালে পাইকগাছা থানার ওসি এম মশিউর রহমান ও দাকোপ থানার ওসি শিকদার আক্কাস আলীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি বিশেষ দল বনে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে যায়। টের পেয়ে দস্যু বাহিনীর সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় আধা-ঘণ্টা পর দস্যুরা বনের আরও ভেতরে পালিয়ে যায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই সিরাজ মারা যায় বলে দাবি করেছে পুলিশ।
খুলনার পুলিশ সুপার গোলাম রউফ খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ সময় সেখান থেকে একটি দেশি বন্দুক, দুটি পাইপগান, বন্দুকের ১০ রাউন্ড গুলি, চারটি দা ও একটি চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পুলিশের দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। রাতেই এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে খুলনার দাকোপ থানায় মামলা করেছে।
সিরাজগঞ্জে আ.লীগ নেতা হত্যা মামলা আরেক আসামি বিএনপিকর্মীর লাশ উদ্ধার
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামি জাহাঙ্গীর আলমের (৩০) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত জাহাঙ্গীর সদর উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দেলার ছেলে। সে বিএনপিকর্মী বলে জানা গেছে।
গতকাল সকাল ৮টার দিকে জেলার কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ওভারব্রিজের পাশ থেকে জাহাঙ্গীরের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এ মামলার তিন আসামির লাশ উদ্ধার করা হলো। তারা সবাই বিরোধী দলের নেতাকর্মী।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, সিরাজগঞ্জ-জামতৈল রেললাইনের পাশে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। পরে সকাল ৮টার দিকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার অফিসার (ওসি) এটিএম ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তাকে কারা কিভাবে হত্যা করেছে তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে মামলা করার করা হবে।
নুরুল কবিরের বিশ্লেষণ—জলজ্যান্ত মানুষকে গ্রেফতার করে মেরে ফেলছে র্যাব
ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক নুরুল কবির বলেছেন, বাংলাদেশে র্যাব সৃষ্টির পর থেকেই তারা এবং তাদের সঙ্গে অপরাপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।
জলজ্যান্ত মানুষকে গ্রেফতার করে র্যাব তাদের মেরে মেলছে। আর এ বিষয়টি তারা নিজেরা যেমন জানে, দেশের মানুষও তা জানে। একই সঙ্গে সারাবিশ্বও তা জানে। এগুলো ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা ছাড়া আর কিছু নয়।
রেডিও তেহরানকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে নুরুল কবির এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, র্যাবসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে যারা মারা গেছেন তাদের সবাইকে খুব ভালো মানুষ মনে করার কারণ নেই। তবে এটাও মনে করার কারণ নেই সমাজের চোখে যারা অপরাধী তাদের বিনাবিচারে হত্যা করা যাবে। এ ধরনের হত্যা করার অধিকার তাদের নেই।
নুরুল কবির বলেন, দেশের বিভিন্ন পর্যায় থেকে র্যাবের এসব হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হলেও র্যাব তাতে ভ্রুক্ষেপ করেনি। কারণ, র্যাবের এসব হত্যাকাণ্ডকে সরকার অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছে; এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক ব্যাপার। যেভাবে র্যাব হত্যা করে চলেছে তাতে তাদের চেয়ে চরমপন্থী কেউ হতে পারে না।

উৎসঃ আমার দেশ

One comment

  1. very sad
    Jara kjarap kajay jorito ,
    Taderk bicherer aotay ana uchit
    Hotta bondho kortay hobay very soon.
    Ata jatie jonno humky