বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে শত প্রশ্ন থাকলেও বাংলাদেশ নিয়ে তৈরী করা একটি ভিডিও বার্তাকে আইমান আল জাওয়াহিরির বলে প্রচার করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে একটি মহল। ওই ভিডিও বার্তাটির বরাত দিয়ে কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে যে, আল কায়দার প্রধান আইমান আল জাওয়াহিরি বাংলাদেশে জিহাদের ডাক দিয়েছেন। কিন্তু ওই ভিডিও বার্তাটির বিশ্বাসযোগ্যতার বিষয়ে কিভাবে নিশ্চিত হওয়া গেল তা নিয়ে কোন যুক্তি, তথ্য-উপাত্ত হাজির করেনি ওই সংবাদ মাধ্যমগুলো।
এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করা গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে ‘ক্লিপটি’ তাদের হাতে এসেছে। কিন্তু কিভাবে তাদের হাতে এলো, কে তাদেরকে বার্তাটি দিল এই বিষয়গুলো নিয়ে কোন বক্তব্যই দেওয়া হয়নি। একারণেই, সন্দেহ করা হচ্ছে, বাংলাদেশে ইসলামি জঙ্গীবাদের জুজুকে আরও শক্তিশালী করতেই কোন একটি মহল পরিকল্পিতভাবে আল কায়দার নামে ভূয়া ভিডিও প্রচার করতে পারে।
এইভাবে ভূয়া ভিডিও নির্মাণ করে আল কায়েদার মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খাওয়ার শত শত দৃষ্টান্ত স্থাপন করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেই একই কৌশল অনুসরণ করে বাংলাদেশেও আইমান আল জাওয়াহিরির নামে ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে কোন একটি মহল নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করতে পারে। এছাড়া, আল কায়েদার নামে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ভূয়া ভিডিও বার্তা প্রচারের ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও একইভাবে একটি মহল আইমান আল জাওয়াহিরির নাম করে একটি ভূয়া ভিডিও বার্তা প্রচার করেছিল।
এখনও পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করেই আল কায়েদার নামে ভিডিও বার্তা সবচেয়ে বেশি প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশক্ষেত্রেই অভিযোগ করা হয় যে, প্রকাশিত ভিডিও বার্তাগুলোকে ভূয়া। এমনকি তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই কয়েকটি সংগঠন অভিযোগ করছে যে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশে সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাই আল কায়েদার নামে ভিডিও বার্তা নির্মাণ ও প্রচার করে। সে দেশের মিডিয়া ওই ভূয়া ভিডিওগুলো বিনাপ্রশ্নে প্রচার করে।
আল কায়দার ভিডিও বার্তা নিয়ে প্রচারিত পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনগুলোতেও বিশাল ফাঁক রেখে দেওয়া হয়। পশ্চিমা মিডিয়াগুলোও কখনই কথিত ভিডিও বার্তাগুলো ঠিক কোন উৎস থেকে পেয়েছে, কিভাবে পেয়েছে, কোন উপায়ে ভিডিও বার্তা নির্মাতার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে তা প্রকাশ করে না। এর ফলে মানুষের মধ্যে কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের পক্ষে সমর্থন সৃষ্টি হয়।
আল কায়েদার নামে প্রচার করা ভিডিওগুলো বিশ্লেষণ করে খ্যাতিমান কম্পিউটার প্রযুক্তিবিদ নিল রেউইটয বলেন, ‘অধিকাংশক্ষেত্রেই ভিডিওগুলো ভূয়া। কোন ব্যক্তির বক্তব্য ধারণ করে পরে আবার তাতে প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজন করা হয়। যেই মানের ভিডিও প্রচার করা হয় তার জন্য উন্নতমানের আধুনিক স্টুডিও প্রয়োজন। কিন্তু আফগানিস্তানের কোন অজানা গুহায় লুকিয়ে থেকে কিভাবে এত উন্নতমানের ভিডিও তৈরী করা সম্ভব তা আমার বোধগম্য নয়’।