বাংলাদেশ দেশ নিয়ে আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরির বক্তব্য যে ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে তা আল-কায়েদার কোনো সাইট নয়। এমনকি এটি আল-কায়েদার কোনো কাছাকাছি সাইটও নয়।
বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তরের টকশো-তে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর অ্যামিরেটাস ড. জিল্লুর রহমান খান এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের এতো খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে জাওয়াহিরির কথা বলবে তা মনে হয় না। এছাড়া জাওয়াহিরি খুব ভালোভাবেই জানেন বাংলাদেশ অন্যান্য মুসলিম দেশের মত নয়। ‘এটি একটি মুসলিম মডারেট দেশ। যদি এই দেশ অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো হতো তাহলে গত এক বছরে যেসব সহিংসতা হয়েছে, তারপরে আজকে দেশের এই অবস্থা থাকতো না’ যোগ করেন ড. জিল্লুর।
তিনি বলেন, ‘জিহাদের প্রকৃত অর্থ বা ব্যাখ্যা বিকৃত হয়েছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশের স্কলারদের সাথে আলোচনা করে সবাই একমত হয়েছে যে, জিহাদ মানে মানবতার কল্যাণে সংগ্রাম। কিন্তু আল কায়েদা বা অন্যরা তা বিকৃত করেছে।’
এই প্রফেসর অ্যামিরেটাস বলেন, ‘যখন ইসলামের ওপর আক্রমণ হয়, তখন তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ হচ্ছে সবচেয়ে ছোট জিহাদ। আর নিজেকে সংশোধনের জন্য মনের বিরুদ্ধে যে জিহাদ, তা সবচেয়ে বড় জিহাদ।’
এ সময় একাত্তর সংযোগে অংশ নিয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখতে হবে। যদি দেশীয় বিশেষজ্ঞরা তার সুরাহা করতে না পারে তাহলে বিদেশিদের সহযোগিতা নেয়া হতে পারে। তিনি বলেন, এখানে কোনো ভিডিও দেখানো হয়নি। কয়েটি অডিও বার্তা দেয়া হয়েছে। এই অডিওতে ভয়েস পরিবর্তনের কোনো কাজ হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার।
এম সাখাওয়াত বলেন, ‘বক্তব্যের ধরন আল-কায়েদার মতো নয়। তাদের অন্যান্য বক্তব্য আন্তর্জাতিক মিডিয়া কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। আর এই বক্তব্যে এমন কিছু নাম এসেছে যা আল-কায়দার জানার কথা নয়।’
‘মনে হচ্ছে- একটি স্ক্রিপ্ট তার হাতে কেউ তুলে দিয়েছে আর তিনি সেটি পড়ে দিয়েছেন। আর যে সাইটে বক্তব্য এসেছে সেটি আল কায়েদার নয়, এটি একটি ওপেন সাইট, এখানে যে কেউ তার বক্তব্য দিতে পারে।’ যোগ করেন তিনি।
এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, ‘আল-কায়েদার যে কোনো বক্তব্য নিয়ে সাধারণত আন্তর্জাতিক মিডিয়া গুরুত্ব সহকারে খবরটি প্রচার করে। কিন্তু এই বক্তব্য নিয়ে এখনও কোনো মিডিয়া নিউজ করেনি।’ তিনি বলেন, এটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কলহের কারণেও কেউ এটি করে থাকতে পারে। সরকারের উচিত প্রকৃত বিষয় খুঁজে বের করা।
ড. জিল্লুর বলেন, বাংলাদেশের সাথে অবশ্যই অন্যান্য মুসলিম দেশের সাথে অনেক পার্থক্য আছে। এখানে আল-কায়েদার প্রভাব থাকতে পারে না। কারণ এই দেশে শিয়া-সুন্নির মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। এখানে মহিলাদের ক্ষমতায়ন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যা আল কায়েদা গ্রহণ করে না। আল-কায়েদা যাবে মধ্যপ্রাচ্যে বা পাকিস্তানে। তারা বাংলাদেশে এখন এসে সময় নষ্ট করবে না।