দেশজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করায়; বিশেষ করে ভাইরাসের অতিসংক্রামক ডেল্টা ধরন ছড়িয়ে পড়ায় ইংল্যান্ড থেকে লকডাউনের সব বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সময় চার সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়ার কথা বিবেচনা করছে যুক্তরাজ্য সরকার।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ২১ জুনের পর ইংল্যান্ড থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধে আরোপিত সব বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কথা ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সময় পিছিয়ে দেয়ার এ খবর জানায়। তবে এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান ডাউনিং স্ট্রিটের ওই কর্মকর্তারা।
বলেন, আগামী সোমবার নাগাদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার কথা। এখনো নানা তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
হোয়াইটহলের এক কর্মকর্তা বলেন, বেশ কয়েকটি বিকল্প বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে বিধিনিষেধ শিথিলের সময় চার সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তালিকায় এক নম্বরে আছে।
বিধিনিষেধ শিথিলের সময় চার সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হলে ওই সময়ে টিকাদান কার্যক্রম আরো কার্যকরভাবে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে টিকাদান কার্যক্রমে সবথেকে এগিয়ে যুক্তরাজ্য। এরই মধ্যে দেশটিতে তরুণদেরও টিকা দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
ইংল্যান্ডে লকডাউন শিথিলের শেষ পর্যায়ে নাইটক্লাব খুলে দেওয়া হবে। এছাড়া, নানা রকম অনুষ্ঠান আয়োজন, বিয়ে এবং অন্যান্য অনুষ্ঠান যেখানে সরাসরি অনেক মানুষ জড়ো হয় সেসব অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতিও পুনরায় দেয়া হবে।
বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সময় পিছিয়ে দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উপর গত কয়েকদিন ধরেই চাপ বাড়ছে।
সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পর এবার ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) থেকেও সময় পিছিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিএমএ কাউন্সিলের প্রধান ডা. চান্দ নাগপাল বলেন, ‘‘কতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, বিষয়টা শুধু এভাবে ভাবলে হবে না। বরং এটা তরুণদের একটি বড় অংশের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়ার বিষয়, যাদের শরীরে এ রোগের কারণে দীর্ঘমেয়াদে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।”
শুক্রবারও যুক্তরাজ্যে ৮,১২৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ১৭ জন।
ডেল্টা ধরন:
ভারতে প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ধরন ডেল্টা। যুক্তরাজ্যে প্রথম শনাক্ত আলফা বা কেন্ট ভ্যারিয়ান্ট থেকে এটি প্রায় ৬০ শতাংশ অধিক রোগ বিস্তারে সক্ষম।
এছাড়া আলফা ধরনে আক্রান্তদের তুলনায় ডেল্ট ধরনে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুণ।
যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত ডেল্টা ধরনের আক্রান্তদের দুইতৃতীয়াংশই টিকার একটি ডোজও নেয়নি। স্বাস্থ্যকর্মীরা জোর দিয়ে বলেছেন, টিকার একটি ডোজের চেয়ে যারা দুইটি ডোজ গ্রহণ করেছেন তাদের শরীরে সব ধরনের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অধিক সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হয়।
যুক্তরাজ্যে প্রায় তিন কোটি মানুষ টিকার দুইটি ডোজই গ্রহণ করেছেন। যা দেশটির মোট প্রাপ্ত বয়স্ক জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশের বেশি।
London Bangla A Force for the community…
