মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতাদের নির্বাচনী হলফনামায় দেওয়া অঢেল সম্পদের বিবরণে বিব্রত অবস্থায় পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা যে সম্পদের বিবরণ দিয়েছিলেন তা ক্ষমতার পাঁচ বছরে অবাক হওয়ার মতো বেড়ে গেছে। কারও কারও সম্পদের পরিমাণ ১০০ গুণের বেশি বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি চমক দেখিয়েছেন সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান। তার ২০ একক জমি পাঁচ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৬৫ একরে। মন্ত্রী হওয়ার পর তার মূল বিনিয়োগ ছিল জমিতে। এ ছাড়া বার্ষিক আয় বেড়েছে ৭৯ গুণ। পাঁচ বছর আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মাহবুবুর রহমানের জমা টাকা ছিল ৮৩ হাজার ১১২ টাকা। এখন তার নিজের নামে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাই আছে ৪ কোটি ৮৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৮২ টাকা। মন্ত্রীদের এভাবে সম্পদের বিবরণী দেখে বিস্মিত হয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. ইফতেখারুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য প্রকাশের মধ্য দিয়ে জনগণের জানার সুযোগ হয়েছে রাজনীতিবিদদের সম্পর্কে। এটা ইতিবাচক। তবে তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। হলফনামায় যেসব সম্পদ আছে, সেগুলো বৈধ নাকি অবৈধ তা খতিয়ে দেখতে হবে দুদক ও নির্বাচন কমিশনকে। এ ক্ষেত্রে এ দুটি প্রতিষ্ঠানকে কারও চাপের কাছে নতিস্বীকার করলে চলবে না। প্রার্থীদের দেওয়া তথ্য অনুসন্ধান করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিপরীতে আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার করতে হবে।
জানা গেছে, শুধু একজন মাহবুবুর রহমান নন, এভাবে সম্পদ বেড়েছে প্রভাবশালী সব মন্ত্রী-এমপির। এমনকি কমিউনিস্ট পার্টি থেকে আগত মান্নান খানও বাদ যাননি। মন্ত্রী হয়ে নামে-বেনামে কম-বেশি সবাই আয়-উন্নতি করেছেন। দেখা গেছে, ২০০৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় আবদুল মান্নান খানের আয় ছিল ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা, নির্ভরশীলদের কোনো আয়ই ছিল না। পাঁচ বছর পর তিনি ও তার স্ত্রী বা অন্য নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় হয়ে গেছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। আয়ের তুলনায় মান্নান খানের পরিবারের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে বহুগুণ। পাঁচ বছর আগে তার সম্পদ ছিল প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকার। আর এখন সেই সম্পদ হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকার। পাঁচ বছরে ১০৭ গুণ বেশি সম্পদ বেড়েছে তার।
এ ছাড়া কুষ্টিয়া-৩ আসনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট পেয়েছেন দলের প্রভাবশালী নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফ। হলফনামায় হানিফের বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নামে নগদ আছে ৪৩ লাখ ৭৯ হাজার ১৫৪ টাকা ও স্ত্রীর নামে আছে মাত্র ৬ হাজার ২২ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে ৮১ হাজার ৪৭৪ আর স্ত্রীর নামে আছে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৫১ টাকা। রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু নরসিংদী-৫ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। সাবেক এই মন্ত্রীর হলফনামা অনুযায়ী, তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নগদ আছে ৫৭ লাখ ৮৭ হাজার ৯৮৩ আর স্ত্রীর নগদ ৪৮ লাখ ৩৩ হাজার ৯৫৩ টাকা। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের জমা ৮ লাখ ৫০ হাজার আর স্ত্রীর নামে ২০ লাখ টাকা।
এদিকে মহাজোট সরকারের পাঁচ বছরে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক। তিনি নিজের নামের পাশাপাশি স্ত্রী ইলা হকের নামেও গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। এবারও তিনি এরই মধ্যে সাতক্ষীরা-৩ আসন থেকে বিজয়ী হওয়ার পথে। তার হলফনামায় দেখা গেছে, রুহুল হক বছরে কৃষি থেকে ৫৫ হাজার টাকা আয় করেন। এ ছাড়া বাড়িভাড়া বাবদ পেয়ে থাকেন ৬ লাখ ২৫ হাজার আর ব্যবসা থেকে ২২ লাখ ২৩ হাজার ৪০০ টাকা। শেয়ারবাজারেও ৩৪ লাখ ২০ হাজার ৭৪১ টাকা লগি্ন করেছেন। মন্ত্রীর কাছে নগদ আছে মাত্র ২৯ হাজার ৪৩২ টাকা অথচ স্ত্রীর কাছে আছে ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৪ টাকা। সর্বশেষ মন্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ২ কোটি ৬২ লাখ ৮৩ হাজার ৫২৩ টাকা অথচ স্ত্রীর নামে জমা আছে ৭ কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা। মন্ত্রীর নামে ৮০ হাজার টাকা দামের মূল্যবান ধাতু ও স্বর্ণালঙ্কার আছে এবং স্ত্রীর নামে আছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা দামের স্বর্ণালঙ্কার। রুহুল হকের স্ত্রী এত টাকার মালিক হওয়া সত্ত্বেও তার পেশার কথা উল্লেখ করা হয়নি হলফনামায়। কিন্তু ২০০৮ সালের হলফনামা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ২০১৩ সালের তুলনায় সম্পদের পরিমাণ অনেক কম ছিল। ২০০৮ সালে বাড়িভাড়ায় বছরে আয় ছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার, ব্যয়সায় ২২ লাখ ৫৬ হাজার ১০০, পেশায় ১২ লাখ ৯১ হাজার ৯৮৯ এবং কৃষিতে ৪৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া ব্যবসায় তার স্ত্রীর আয় ছিল ২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। বেড়েছে অস্থাবর সম্পদও। ২০০৮ সালে রুহুল হকের নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ২২ লাখ ২৫ হাজার ৬০৬, ব্যাংকে ছিল ৮৭ লাখ ৭২ হাজার এবং শেয়ারে ছিল ৬০ লাখ ২০ হাজার টাকা। কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের এমপি আবদুর রহমান বদি ২০০৮ সালের নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহ করেছিলেন স্ত্রী-ভাই-বোন ও নিজের কর্মচারীর কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা ধার নিয়ে। কিন্তু পাঁচ বছরে তার আয় বেড়ে গেছে ৩৫১ গুণ। আর নিট সম্পদ বেড়েছে ১৯ গুণের বেশি। হলফনামায় দেওয়া তথ্যে গত পাঁচ বছরে আয় করেছেন ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪০ টাকা। এখন বার্ষিক আয় ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ টাকা। এর আগে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জমা দেওয়া হলফনামায় বলেছেন, তখন তার বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৪৮০ টাকা। হলফনামায় দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মহাজোট সরকার আমলের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী প্রায় সবাই কোটিপতি। গত নির্বাচনে তাদের অধিকাংশের সম্পদের পরিমাণ ছিল লাখ টাকার ঘরে। কিন্তু অনেক মন্ত্রী-এমপি আছেন যারা বিগত পাঁচ বছরে কোটিপতি বনে গেছেন। হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রবীণ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত নবীন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেশি। এ ছাড়া কোটিপতিদের তালিকায় রয়েছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বন ও পরিবেশে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানন, হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী, দীপংকর তালুকদার, এমপি ইলিয়াস মোল্লাহ্, গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. মোতাহার হোসেন প্রমুখ। মন্ত্রী-এমপিদের অঢেল সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনীতি যে ব্যবসায় পরিণত হয়েছে এটা তারই প্রমাণ। কোটি কোটি টাকা খরচ করে ক্ষমতা কেনেন রাজনীতিবিদরা। আর এ ক্ষমতা ব্যবহার করে তারা বিত্তশালী হচ্ছেন। বলা চলে জনকল্যাণমূলক গণতন্ত্র নেই। এতে গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ছে। ক্ষমতাসীনরা বেসামাল হয়েছেন। এ জন্য প্রতি বছর সম্পদের হিসাব দেওয়ার কথা থাকলেও তা তারা প্রকাশ করেননি।
জানা গেছে, শুধু একজন মাহবুবুর রহমান নন, এভাবে সম্পদ বেড়েছে প্রভাবশালী সব মন্ত্রী-এমপির। এমনকি কমিউনিস্ট পার্টি থেকে আগত মান্নান খানও বাদ যাননি। মন্ত্রী হয়ে নামে-বেনামে কম-বেশি সবাই আয়-উন্নতি করেছেন। দেখা গেছে, ২০০৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় আবদুল মান্নান খানের আয় ছিল ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা, নির্ভরশীলদের কোনো আয়ই ছিল না। পাঁচ বছর পর তিনি ও তার স্ত্রী বা অন্য নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় হয়ে গেছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। আয়ের তুলনায় মান্নান খানের পরিবারের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে বহুগুণ। পাঁচ বছর আগে তার সম্পদ ছিল প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকার। আর এখন সেই সম্পদ হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকার। পাঁচ বছরে ১০৭ গুণ বেশি সম্পদ বেড়েছে তার।
এ ছাড়া কুষ্টিয়া-৩ আসনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট পেয়েছেন দলের প্রভাবশালী নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফ। হলফনামায় হানিফের বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নামে নগদ আছে ৪৩ লাখ ৭৯ হাজার ১৫৪ টাকা ও স্ত্রীর নামে আছে মাত্র ৬ হাজার ২২ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে ৮১ হাজার ৪৭৪ আর স্ত্রীর নামে আছে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৫১ টাকা। রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু নরসিংদী-৫ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। সাবেক এই মন্ত্রীর হলফনামা অনুযায়ী, তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নগদ আছে ৫৭ লাখ ৮৭ হাজার ৯৮৩ আর স্ত্রীর নগদ ৪৮ লাখ ৩৩ হাজার ৯৫৩ টাকা। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের জমা ৮ লাখ ৫০ হাজার আর স্ত্রীর নামে ২০ লাখ টাকা।
এদিকে মহাজোট সরকারের পাঁচ বছরে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক। তিনি নিজের নামের পাশাপাশি স্ত্রী ইলা হকের নামেও গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। এবারও তিনি এরই মধ্যে সাতক্ষীরা-৩ আসন থেকে বিজয়ী হওয়ার পথে। তার হলফনামায় দেখা গেছে, রুহুল হক বছরে কৃষি থেকে ৫৫ হাজার টাকা আয় করেন। এ ছাড়া বাড়িভাড়া বাবদ পেয়ে থাকেন ৬ লাখ ২৫ হাজার আর ব্যবসা থেকে ২২ লাখ ২৩ হাজার ৪০০ টাকা। শেয়ারবাজারেও ৩৪ লাখ ২০ হাজার ৭৪১ টাকা লগি্ন করেছেন। মন্ত্রীর কাছে নগদ আছে মাত্র ২৯ হাজার ৪৩২ টাকা অথচ স্ত্রীর কাছে আছে ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৪ টাকা। সর্বশেষ মন্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ২ কোটি ৬২ লাখ ৮৩ হাজার ৫২৩ টাকা অথচ স্ত্রীর নামে জমা আছে ৭ কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা। মন্ত্রীর নামে ৮০ হাজার টাকা দামের মূল্যবান ধাতু ও স্বর্ণালঙ্কার আছে এবং স্ত্রীর নামে আছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা দামের স্বর্ণালঙ্কার। রুহুল হকের স্ত্রী এত টাকার মালিক হওয়া সত্ত্বেও তার পেশার কথা উল্লেখ করা হয়নি হলফনামায়। কিন্তু ২০০৮ সালের হলফনামা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ২০১৩ সালের তুলনায় সম্পদের পরিমাণ অনেক কম ছিল। ২০০৮ সালে বাড়িভাড়ায় বছরে আয় ছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার, ব্যয়সায় ২২ লাখ ৫৬ হাজার ১০০, পেশায় ১২ লাখ ৯১ হাজার ৯৮৯ এবং কৃষিতে ৪৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া ব্যবসায় তার স্ত্রীর আয় ছিল ২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। বেড়েছে অস্থাবর সম্পদও। ২০০৮ সালে রুহুল হকের নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ২২ লাখ ২৫ হাজার ৬০৬, ব্যাংকে ছিল ৮৭ লাখ ৭২ হাজার এবং শেয়ারে ছিল ৬০ লাখ ২০ হাজার টাকা। কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের এমপি আবদুর রহমান বদি ২০০৮ সালের নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহ করেছিলেন স্ত্রী-ভাই-বোন ও নিজের কর্মচারীর কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা ধার নিয়ে। কিন্তু পাঁচ বছরে তার আয় বেড়ে গেছে ৩৫১ গুণ। আর নিট সম্পদ বেড়েছে ১৯ গুণের বেশি। হলফনামায় দেওয়া তথ্যে গত পাঁচ বছরে আয় করেছেন ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪০ টাকা। এখন বার্ষিক আয় ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ টাকা। এর আগে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জমা দেওয়া হলফনামায় বলেছেন, তখন তার বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৪৮০ টাকা। হলফনামায় দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মহাজোট সরকার আমলের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী প্রায় সবাই কোটিপতি। গত নির্বাচনে তাদের অধিকাংশের সম্পদের পরিমাণ ছিল লাখ টাকার ঘরে। কিন্তু অনেক মন্ত্রী-এমপি আছেন যারা বিগত পাঁচ বছরে কোটিপতি বনে গেছেন। হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রবীণ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত নবীন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেশি। এ ছাড়া কোটিপতিদের তালিকায় রয়েছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বন ও পরিবেশে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানন, হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী, দীপংকর তালুকদার, এমপি ইলিয়াস মোল্লাহ্, গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. মোতাহার হোসেন প্রমুখ। মন্ত্রী-এমপিদের অঢেল সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনীতি যে ব্যবসায় পরিণত হয়েছে এটা তারই প্রমাণ। কোটি কোটি টাকা খরচ করে ক্ষমতা কেনেন রাজনীতিবিদরা। আর এ ক্ষমতা ব্যবহার করে তারা বিত্তশালী হচ্ছেন। বলা চলে জনকল্যাণমূলক গণতন্ত্র নেই। এতে গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ছে। ক্ষমতাসীনরা বেসামাল হয়েছেন। এ জন্য প্রতি বছর সম্পদের হিসাব দেওয়ার কথা থাকলেও তা তারা প্রকাশ করেননি।
উৎসঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন