আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের জমা দেয়া সম্পদের বিবরণী নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করায় এর বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে গত পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগের অনেক নেতার সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন তাদের দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর জন্যই বিভিন্ন খবরের কাগজে এসব তথ্য নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন করা হচ্ছে।
যদিও বাংলাদেশের নির্বাচনী আইন অনুযায়ী প্রার্থিদের সম্পদের বিবরনী সহ আট ধরনের তথ্য প্রকাশ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
বিভিন্ন পত্রিকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণী প্রকাশিত হওয়ায় অস্বত্তি দেখা যাচ্ছে তাদের মধ্যে। কেই কেউ ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়াও দেখিয়েছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে সোমবার আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন খান আলমগীরের নেতৃত্বে একটি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে দেখা করে তাদের আপত্তির কথা তুলে ধরেন। কিন্তু কেন তাদের এই আপত্তি?
মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন যে কোন ব্যক্তির আয়কর দলিল একটি গোপনীয় বিষয়। তিনি বলেন এটা একমাত্র দেখতে পারেন সংশ্লিষ্ট আয়কর কর্তৃপক্ষ এবং প্রয়োজনে আদালত।
মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন , “ এসব কথাবার্তা বলা বেহুদা।”
২০০৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণী এবং শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ আট ধরনের তথ্য দেবার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
২০০৮ সালের নির্বাচনেও প্রার্থীদের তথ্য প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আওয়ামীলীগ নেতা মহিউদ্দিন খান আলমগীর দাবী করছেন সম্পদের বিবরণ প্রকাশের জন্য আদালতের কোন নির্দেশনা ছিলনা।
কিন্তু তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন বলেন শুধু প্রার্থীদের তথ্য নেয়া নয়, সেটি প্রচার করার নির্দেশনাও দিয়েছিল আদালত।
আওয়ামীলীগ নেতা মাহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, সম্পদের বিবরণী সংশ্লিষ্ট আয়কর কর্তৃপক্ষ দেখবেন এবং নির্বাচন কমিশন দেখবেন। তিনি বলেন , “ এর বাইরে ভিন্নতর কর্তৃপক্ষ (গণমাধ্যম) এসে যদি নির্বাচনের আগে কোন মন্তব্য দেন তাহলে আমি মনে করবো তারা নির্বাচনে অযথা হস্তক্ষেপ করছেন।”
বাংলাদেশের বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন মনে করে নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী প্রার্থীদের তথ্য যদি প্রকাশ করা হয়, তাহলে জনগন বুঝতে পারবে তারা কাকে ভোট দিতে যাচ্ছে।
নাগরিক সংগঠনগুলো মনে করে নির্বাচনে বিজয়ীরা যেহেতু জনগনের প্রতিনিধি সেজন্য তাদের সম্পদের বিবরণী গোপনীয় বিষয় হতে পারেনা। আদালতও একই ধরনের মত দিয়েছিলো।
কিন্তু আওয়ামীলীগ নেতা মহিউদ্দিন খান আলমগীর মনে করেন সংবাদ মাধ্যমে সম্পদের বিবরণী প্রকাশ ঠিক হচ্ছেনা। তিনি বলেন , “ আদালত চাইলে সম্পদের বিবরণ অবশ্যই জমা দিব। কিন্তু তারা (সংবাদ মাধ্যম) আদালত নয়।
তিনি বলেন, রোববার নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক করলেও তথ্য প্রকাশ না করতে কোন অনুরোধ তারা করেননি। তবে প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণী ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার কোন প্রয়োজন ছিলো না বলে উল্লেখ করেন মহিউদ্দিন খান আলমগীর।
এদিকে আওয়ামী লীগের আপত্তির মুখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ আজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রার্থীদের তথ্য প্রকাশ সংক্রান্ত আইনে কি বলা হয়েছে সেটি তারা পর্যালোচনা করে দেখবেন।