অন্তহীন সমালোচনা খালেদা জিয়ার। ঘরে বাইরে এই সমালোচনা। যারা সমালোচনা করছেন তাদের যুক্তি হচ্ছে খালেদার আন্দোলন হঠকারী। দেশ বিরোধী। জনস্বার্থ বিরোধী। দেশের কল্যাণে এ ধরনের আন্দোলন কোন ভূমিকা রাখবে না। বরং দেশটার বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে। অনেকে বলছেন, কি হলো আন্দোলন করে। সরকার তো টলেনি। ঠিক মতোই আছে। নির্বাচন হচ্ছে। মাঝখান দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি হলো। ক্ষতি হলো রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের। দেশের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হলো। এই যুক্তির সঙ্গে অনেকেই একমত নন। তারা বলছেন, আন্দোলন যদি ব্যর্থই হবে তাহলে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেন কেন? এরশাদ কেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন। কেনইবা তাকে আটকে রাখা হচ্ছে। প্রার্থীরা এলাকায় যাচ্ছেন না কেন? ব্যবসায়ীরা কেন বলছেন আন্দোলন দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। দুই নেত্রীকে আলোচনার কথা বলছেন কেন? বিদেশি পর্যবেক্ষকরা কেন আসছেন না। কেন অর্থমন্ত্রী বলছেন এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কেন বলছে এই নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর কোন সুযোগ নেই। কমনওয়েলথ কেন না করে দিলো। যুক্তরাষ্ট্র কেন এই নির্বাচনের ব্যাপারে কড়া অবস্থান নিলো। আন্দোলন যদি সফলই না হবে তাহলে নির্ধারিত সময়ের আগে কেন সেনা মোতায়েন করা হলো। যৌথবাহিনী কেন গ্রামে গ্রামে বিশেষ অভিযানের নামে জনপ্রত্যাশার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। সর্বোপরি ভোটারবিহীন এক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার কি অর্জন করবে। নির্বাচন যে তামাশা ও কৌতুকে পরিণত হয়েছে সেটা তো প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যেই স্পষ্ট। খালি মাঠে গোল দেয়ার কথা তিনি নিজেই বলছেন। এই দুটি মত এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। হারজিত নিয়ে দুই মতের মানুষেরা ব্যস্ত। কিন্তু দেশের আমজনতার দিকে কে তাকায়। তাদের কথা কে ভাবছে। দেশ জ্বলছে। পুড়ে মরছে মানুষ। খেটে খাওয়া মানুষগুলো কেন বলছে আমরা বাঁচতে চাই। আমরা এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতি চাই না। গ্রামগঞ্জে এই আওয়াজ পৌঁছে গেছে। শাসক দলের সমর্থকরা মানুন আর না মানুন এই নির্বাচন দেশটাকে নৈরাজ্যের পথে ঠেলে দিয়েছে। নির্বাচনের ইতিহাস পাল্টে দিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছে। দেশটাকে বিভক্ত করেছে। জোর করে ক্ষমতায় থাকার পথকে উৎসাহিত করেছে। আমরা সবাই জানি নৈরাজ্য থেকে যে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয় তা থেকেই একনায়কতন্ত্রের জন্ম হয়। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন একনায়কতন্ত্রের জন্ম দেবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। মানুষ কি বলবে। তাদের কি বলার আছে। তাদের তো একটাই অস্ত্র ছিল ভোট। সেটা থেকেও তারা বঞ্চিত। ভোট তো দূরে কথা তারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে। তারা আঁতকে উঠে যৌথবাহিনীর আগমনে। জান যাচ্ছে যাক। কিন্তু সহায় সম্পদ? তাও যাচ্ছে। বুলডোজার কেড়ে নিচ্ছে তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন। মাথা গোঁজার ঠাঁই। পরিবার পরিজনের জন্য কিছুই রেখে যেতে পারছে না। আমরা এমন এক সমাজে বাস করি যেখানে এক বাড়িতে জামায়াত যেমন আছে, তেমনি আছে আওয়ামী লীগ-বিএনপিও। একজনের অপরাধে যখন গোটা বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে তখন অন্যদের স্বপ্নও ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে।
এই রাজনীতির অবসান কবে হবে? মানুষ তো এই রাজনীতি চায় না। তারা তো পরিবর্তন চায়। এই পরিবর্তন কবে কখন আসবে? যে ধারায় রাজনীতিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাতে দেশের অস্তিত্বই হুমকির সম্মুখীন হবে। তাই কেউ কেউ বলছেন, দল নয় দেশের স্বার্থ বড় এটা ভাবতে হবে। বাংলাদেশের বিদেশি বন্ধুরা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। তারা এর পরিবর্তন চান। তারা যেভাবেই পারেন চাপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। এতে আমাদের রাজনীতিকদের হুশ হবে না। কারণ, তাদের কাছে দেশ নয়, ক্ষমতা বড়। এই যখন অবস্থা তখন জনবিচ্ছিন্ন এক সরকারকে কেউ কেউ দূর থেকে আশকারা দিয়ে চলেছেন। তারা এ থেকে হয়তো কিছু অর্জন করতে পারবেন। কিন্তু আমরা কি কিছু পাবো? ইতিহাস বলে শূন্য হাতেই আমাদের ফিরতে হবে। তাই সময় থাকতে ভাবুন। সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি।
এই রাজনীতির অবসান কবে হবে? মানুষ তো এই রাজনীতি চায় না। তারা তো পরিবর্তন চায়। এই পরিবর্তন কবে কখন আসবে? যে ধারায় রাজনীতিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাতে দেশের অস্তিত্বই হুমকির সম্মুখীন হবে। তাই কেউ কেউ বলছেন, দল নয় দেশের স্বার্থ বড় এটা ভাবতে হবে। বাংলাদেশের বিদেশি বন্ধুরা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। তারা এর পরিবর্তন চান। তারা যেভাবেই পারেন চাপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। এতে আমাদের রাজনীতিকদের হুশ হবে না। কারণ, তাদের কাছে দেশ নয়, ক্ষমতা বড়। এই যখন অবস্থা তখন জনবিচ্ছিন্ন এক সরকারকে কেউ কেউ দূর থেকে আশকারা দিয়ে চলেছেন। তারা এ থেকে হয়তো কিছু অর্জন করতে পারবেন। কিন্তু আমরা কি কিছু পাবো? ইতিহাস বলে শূন্য হাতেই আমাদের ফিরতে হবে। তাই সময় থাকতে ভাবুন। সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি।
উৎসঃ মানবজমিন