বাড়ি থেকে পালানো কিশোরীকে ধর্ষণ করে নিজেই বাড়ির লোক ডেকে ফিরিয়ে দিলো ধর্ষক।
অভিযোগটা অবশ্য প্রথমদিকে ওঠেনি। বরং ভাগ্নীকে ফেরত পেয়ে তার মামা এতই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন যে, ওই যুবককে সন্দেহই করেননি। উল্টে তাকে চা খাইয়ে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় করেন। আর তার পরেই কাঁপতে-কাঁপতে বেহুঁশ হয়ে যায় কিশোরী।
অভিযুক্ত যুবকের মোবাইল নম্বর পুলিশের হাতে রয়েছে। রোববার রাত পর্যন্ত অবশ্য অভিযুক্তের নাগাল পায়নি পুলিশ।
এ ঘটনা ঘটেছে ভারতে। আজ সোমবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষা করানোর কথা রয়েছে।
মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে গত বৃহস্পতিবার সকালে বাঁকুড়ার ইন্দাসে বাজিতপুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিল সতেরো বছর বয়সি মেয়েটি। দিনভর খুঁজে তাকে না পেয়ে বাড়ির লোকজন পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন। কিন্তু মেয়ের খোঁজ মেলেনি।
মিলবেই বা কী করে ? রাগের মাথায় মেয়ে তখন ট্রেন ধরে চলে যায় বর্ধমান স্টেশনে।
স্টেশনেই রাত কাটিয়ে পরের দিন সকালে সে একটি দোকানে চা খেতে গিয়েছিল। সেখানে এক যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে জানায়, তার নাম ‘রাজা’। তার চাকরির দরকার শুনে সে বলে, ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তার পরে তাকে একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। হোটেলে তাকে বসিয়ে রেখে চাকরির ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে বলে সে বেরিয়ে যায়। খানিক বাদেই ফিরে যুবকটি তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ কিশোরীর।
তবে ধর্ষক যথার্থই ভদ্রলোক। এই ধরনের অপরাধের পরে সাধারণত যা হয়, এ ক্ষেত্রে কিন্তু তা ঘটেনি। অভিযুক্ত যুবক মেয়েটিকে খুন করেনি, অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে ছেড়ে আসেনি, নিজেও পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেনি। উল্টে মেয়েটির থেকে তার বাবার মোবাইল নম্বর চেয়ে নিজের মোবাইল থেকে সে তাকে ফোন করে বলে “আপনার মেয়ে আমার হেফাজতে রয়েছে। বর্ধমান আদালত চত্বরে এসে নিয়ে যান।” আর মেয়েটিকে বলে দেয়, এই নিয়ে পরে কোথাও টু শব্দ করলে জানে মেরে দেবে।
গোটা সময়টা মেয়েটি চুপ করে ছিল। যুবকটি চলে যেতেই মামা তার সঙ্গে টুকটাক কথাবার্তা শুরু করেন। দুই এক মিনিট অসংলগ্ন কথা বলার পরেই হঠাৎ সে কাঁপতে-কাঁপতে অজ্ঞান হয়ে যায়। মামা তাকে নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছোটেন। তখন তার রক্তপাতও হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকেরা জানান, তার ওপরে শারীরিক নির্যাতন হয়েছে। শুক্রবার মেয়েটির বাবা হাসপাতালে এসে সব শুনে পুলিশে খবর দেন।
শনিবার পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে। তার পরেই ধর্ষণের মামলা করা হয়।
বর্ধমান থানার দাবি, অপরাধী ধরতে তাদের ভরসা শুধু মেয়েটি ও তার মামার মুখে শোনা চেহারার বর্ণনা। আর একটি মোবাইল নম্বর। সেটিও ঘটনার পর থেকেই বন্ধ।