চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার দৌলতপুরে অবস্থিত বিখ্যাত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসার সম্মানিত মুহতামিম আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী দীর্ঘদিন যাবত সম্পৃক্ত থাকা ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র নায়েবে আমীরের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
বুধবার রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি তার পদত্যাগের কথা জানান। বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের এজেন্টদের সাথে তিনি নেই বলে উল্লেখ করেন।
আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী মেয়ের জামাই ও হেফাজত ইসলামীর চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মীর মো. ইদ্রিস এই বিবৃতি প্রেরণ করেন।
বিবৃতিতে আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ধর্মনিরপেক্ষবাদের বিরোধী মুফতী আমিনীর জোটে আমি শরিক ছিলাম। মুফতি আমিনির আদর্শকে ভালোবেসে আমি তার দলকে ভালবেসেছি। কিন্তু বর্তমানে ইসলামী ঐক্যজোটের নামে ধর্মের গোড়া কেটে আগায় পানি দেয়া আওয়ামী দলের এজেন্টদের সাথে আমি নেই। তাই দলটির সিনিয়র নায়েবে আমীরের পদ হতে পদত্যাগ করলাম আমি।
তিনি আরো বলেন, আমার পিতা আল্লামা হারুন বাবুনগরী (রহ.) চিরকাল আওয়ামী ধর্মবিদ্বেষীদের বিপক্ষে কাজ করে গেছেন।
আমি শেষ বয়সে মোটা অংকের লোভে ঐতিহাসিক এই আদর্শ বিনষ্ট করতে দিতে পারব না!
তিনি বলেন, মুফতি মাহমুদ হাসান, মুফতি মীর হুসাইনসহ বিভিন্ন উলামায়ে কেরামের পরামর্শক্রমে আমি পদত্যাগের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এ প্রেক্ষিতে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করতে চাইলেও সঙ্গত কারণে পরে নায়েবে মুহতামিম ও শিক্ষাপরিচালকের পরামর্শক্রমে সংবাদ সম্মেলন থেকে বিরত থাকি।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে হেফাজতে ইসলামীর আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফি চট্টগ্রামের হাটাহাজারী মাদ্রাসা কনফারেন্স হলে জিপিএ-৫ পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কওমি সনদের স্বীকৃতি নিয়ে এক বক্তব্যে বলেন, কেউ কেউ বলছেন আমি নাকি আওয়ামী লীগ হয়ে গেছি। কিন্তু মিথ্যা বলছেন। আমি আওয়ামী লীগ হই নাই। আর আওয়ামী লীগ হয়ে গেলেও আমার কোনো আপত্তি নাই। কারণ আওয়ামী লীগে এমন এমন লোক আছে যারা দ্বীনকে ভালবাসে। তারা মোটা অংকের টাকা দিয়ে মাদ্রাসায় সাহ্যায্য করে।
আর এই বক্তব্যের পরেরদিনই ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র নায়েবে আমীরের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। আর বললেন-আমি আওয়ামী লীগের এজেন্টদের সাথে নেই। আরও উল্লেখ্য যে, অরাজনৈতিক সংগঠন দাবি করা হেফাজতে ইসলামীর অধিকাংশ নেতাই ইসলামী ঐক্যজোটের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।