ব্রেকিং নিউজ
Home / প্রচ্ছদ / বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে ‘জয়বাংলা’ উৎসব করলেন শাজাহান খান

বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে ‘জয়বাংলা’ উৎসব করলেন শাজাহান খান

মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বাদ দিয়েই অনুষ্ঠিত হলো ‘জয়বাংলা’ উৎসব। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর অনুষ্ঠানে থাকলেও মঞ্চের প্রথম সারিতে ছিলেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

এ নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বিষয়টি গড়িয়েছে দলীয় হাইকমান্ডের কাছেও।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মাদারীপুরে বুধবার বিকেলে সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজ মাঠে নৌমন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘জয়বাংলা’ উৎসব হয়।

সকালে উৎসবের প্রথম অধিবেশনে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতা হয়। বিকেলে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার, সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ নুুরুল হক মিয়া, বিএনপির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র চৌধুরী নুরুল আলম বাবু চৌধুরী, বিএনপি সমর্থিত পৌর চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান খান ও অগ্নি বীনার চেয়ারম্যান এইচ এম সিরাজ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- জয়বাংলা উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক নৌমন্ত্রীর ছোট ভাই ও মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি ওবাইদুর রহমান খান। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব সাকিলুর রহমান সোহাগ তালুকদার।

অনুষ্ঠানে দেখা যায়, বিকেল ৩টার পর থেকেই বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা নৌমন্ত্রী সমর্থিত বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও পতাকা নিয়ে উৎসবে অংশ নিতে থাকে। নৌমন্ত্রী তাদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।

বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে আসেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। তবে সভায় জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা ছাড়া তেমন কাউকে অংশ নিতে দেখা যায়নি। বলতে গেলে দলটির শীর্ষ নেতারা এতে অনুপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি মঞ্চের প্রথম সারিতে জাসদ ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতাদের উপেক্ষা করে বিএনপি ও জাসদ নেতাদের অংশ নেয়ার বিষয়ে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা বলেন, জেলা আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়েই জয়বাংলা উৎসব করা হলো। মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম সংগঠন আওয়ামী লীগকে ছাড়া নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত সংসদ সদস্য শাজাহান খান কীভাবে অনুষ্ঠান করেছেন সেটা আমার বোধগম্য নয়। আমরা দলের হাইকমান্ডকে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছি। আশা রাখি বিষয়টি দলীয় ফোরামে আলোচনা হবে। আমরা দলীয় শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারিনি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে বলেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে যারা জয়বাংলার অনুষ্ঠান করে, তারা কখনো জয়বাংলার লোক নয়। এই অনুষ্ঠানে কিছু বিএনপির নেতাকে দাওয়াত করা হয়েছে। যারা এখনো বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বাস করে না। এখানে আমাদের দাওয়াত না দেয়াই ভালো হয়েছে।

উৎসবের উদ্বোধক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ আর আওয়ামী লীগকে আলাদা করে দেখার বিষয় নয়। তবে বার বার আওয়ামী লীগকে দুর্বল করার জন্য পরাজিত শক্তি পেছনে আঠারমতো লেগে আছে। কিন্তু তারা সফল হয়নি। এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তারা পরাজিত হবে।

জয়বাংলা উৎসবের পৃষ্ঠপোষক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জয়বাংলাকে ছড়িয়ে দিতেই এই আয়োজন। জয়বাংলা কারো একার নয়, এ স্লোগান সমস্ত বাঙালির। আমাদের প্রিয় নবী যেমন তার দেশরক্ষার জন্য স্লোগান দিয়েছিল, আর সাহাবিরাও দিয়েছেন। ঠিক তেমন এই জয়বাংলা স্লোগান বাঙালির নিজস্ব স্লোগান।