২৩ মার্চ ২০১৬: অপারেশনের টেবিলে যুবকের পেট থেকে বেড়িয়ে আসছে একের পর এক টুথব্রাশ, মেসওয়াক, কাঁটা চামচ, প্লাস্টিকের টুকরো, ব্যাটারির সিসার দণ্ড, কাপড় চোপড়। এসব দেখে চিকিৎসকের চোখ ছানাবড়া। অবিশ্বাস্য এই ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের ইসলামিয়া জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
গত শুক্রবার মারাত্মক পেট ব্যথা নিয়ে সাইফুল ইসলাম শামীম নামে ৩২ বছর বয়সী এক যুবক ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। সেদিন রাতেই তাঁর পেটে অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসকরা এসব বস্তু বের করেন ।
বুধবার বিকেলে বিস্ময়জাগানিয়া এই ঘটনার বর্ণনা দেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (অস্ত্রোপচার) ডা. মো শফিকুল ইসলাম। এনটিভি অনলাইনের সাথে আলাপচারিতায় তিনি জানালেন, শুক্রবার দুপুরে শামীমের স্বজনরা তাঁকে শহরের চরপাড়ায় অবিস্থত ইসলামিয়া জেনারেল হাসপাতাল নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান।
একইদিনে রাত ১০টায় তাঁর পেটে অস্ত্রোপচার করা হয়। এ সময় তাঁর পেট থেকে চিকিৎসকরা একের পর এক করে ১৯টি টুথব্রাশ, চারটি মেসওয়াক (গাছের ডাল দিয়ে তৈরি দাঁতন), একটি ভাঙা কাঁটাচামচ, দুটি প্লাস্টিকের টুকরো, এক টুকরো কাপড় এবং ব্যাটারির ভেতরে থাকা দুটি সিসার দণ্ড বের করে আনেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মো শফিকুল ইসলাম জানান, টুথব্রাশগুলো সম্পূর্ণ আস্ত ছিল দেখে বিস্মিত হয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। এত বড় এতগুলো টুথব্রাশ কীভাবে সাইফুল ইসলামের পেটে আস্ত ঢুকল তা সত্যিই বিস্ময় জাগিয়েছে- যোগ করেন ডা. শফিকুল।
ডা. মো শফিকুল ইসলাম আরো জানান, অস্ত্রোপচারের আগে শামীমের পেটে এক্স-রে করে তিনটি ধাতব টুকরোর অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছিলেন চিকিৎসকরা। তিনি বলেন, ‘এটি নিঃসেন্দহে একটি বিরল ঘটনা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ রকম ঘটনা বিরল।’ এ ছাড়া শামীম নামে ওই যুবককে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে উল্লেখ করেন ডা. ইসলাম।
ডা. মো শফিকুল ইসলাম জানান, শামিম মানসিক ভারসাম্যহীন। আর তাই দিনের পর দিন সে এসব খেয়েছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়াতে ভবিষ্যতেও হাতের কাছে যা পাবে তাই খেয়ে ফেলার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। আর তাই সতর্ক থাকতে হবে তাঁর পরিবারের সদস্যদের। তবে অস্ত্রোপচারের পর শামিম এখন সম্পূর্ণ আশঙ্কামুক্ত বলে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকরা।