১০ মার্চ ২০১৬: মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন হতিন কিয়াও। অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দুইজন প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে। যেহেতু এনএলডি পার্লামেন্টের উভয় হাউসে সংখ্যা গরিষ্ঠ তাই কিয়াও’র প্রেসিডেন্ট হওয়াটা নিশ্চিত। এর মধ্য দিয়ে এটাও নিশ্চিত হয়ে গেছে যে, গণতন্ত্রের জন্য যুগের পর যুগ সংগ্রাম করা নোবেলজয়ী অং সান সু চি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন না। তবে আগে একবার সুচি বলেছিলেন তিনি প্রেসিডেন্টের উপরে অবস্থান করবেন।
বৃহস্পতিবার থেকে মিয়ানমারে শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া। এতে এনএলডি সংসদের উচ্চ ও নিম্নকক্ষে দুইজনকে মনোনয়ন দিয়েছে। সেনাবাহিনী মনোনয়ন দিয়েছে একজনকে। এদের মধ্য থেকে একজনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবেন এমপিরা। বাকি দুইজন হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
মিয়ানমারে ১৯৬২ সালে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। তারপর থেকে সেখানে সরাসরি সেনা বা সেনা সমর্থিত সরকার শাসন করে আসছিলে। সর্বশেষ নির্বাচনে অং সান সু চির দল পার্লামেন্টের উভয় হাউসে সংখ্যা গনিষ্ঠতা পায়। তবে সেনাবাহিনীর হাতে রয়ে গেছে সংরক্ষিত ২৫ ভাগ আসন।
নভেম্বরের নির্বাচনে এনএলডি জয়ী হওয়ার পর থেকে কে হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট তা নিয়ে ছিল ব্যাপক আগ্রহ। দেশটির আইন অনুযায়ী নিজের সন্তান বিদেশি নাগরিক হলে কেউ প্রেসিডেন্ট হতে পারেন না। সু চির দুই ছেলে ব্রিটিশ নাগরিক। ফলে তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারছেন না।
ধারণা করা হচ্ছিল শেষ পর্যন্ত সু চির সাথে সামরিক বাহিনীর কোনো চুক্তি হবে। যাতে তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা আর হলো না। ফলে নিজের অনুগত হতিন কিয়াওকে প্রেসিডেন্ট করছেন তিনি। সু চি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর বলেছিলেন নিজে হতে না পারলে পছন্দের কাউকে প্রেসিডেন্ট করবেন, যে তার কথা মতো কাজ করবে।
কিয়াও সুচির খুবই অনুগত। তিনি যথেষ্ট নম্র ও স্বচ্ছ্ব হিসেবে পরিচিত। এক সময় সু চির গাড়ি চালক ছিলেন। তার বাবা এনএলডি প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেন। তিনি নিজেও কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহীদের একজন। সুখে-দুঃখে সব সময় সু চির পাশে ছিলেন তিনি। ফল হিসেবে জান্তা উত্তর মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন হতিন কিয়াও। সূত্র: বিবিসি।