০৯ মার্চ ২০১৬: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ও বাসভবন হোয়াইট হাউস। এখান থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সব সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই হোয়াইট হাউসেই একজন উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুমানা আহমেদ।
নিজেকে ‘হিজাবি বলতেই পছন্দ করেন রুমানা। কারণ হিজাব পরেই তিনি হোয়াইট হাউসে কাজ করেন।
রুমানা আহমেদ নামের এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান তরুণী হিজাব পরেই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপ-উপেদষ্টা বেন রোডসের সহকারী হিসেবে কাজ করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা বেন রোডসের হয়ে কাজ করেন রুমানা আহমেদ। রোডসের হয়ে কাজ করা উপদেষ্টাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ রুমানা। হোয়াইট হাউসে কর্মরত মুসলমানদের আল অ্যারাবিয়া নিউজের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তাঁর কথা।
আল অ্যারাবিয়ার প্রতিবেদন বলা হয়েছে, শুধু রুমানা আহমেদই নয়, হোয়াইট হাউসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছেন মুসলমানরা। এঁদের অনেকেই কাজ করছেন হোয়াইট হাউসের ব্যবস্থাপনা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে।
আল অ্যারাবিয়া জানিয়েছে, রুমানা আহমেদের জন্ম ওয়াশিংটনে। তাঁর মা ও বাবা বাংলাদেশি। গত ২০০৯ সালের জুলাইয়ে হোয়াইট হাউসের শিক্ষানবিস হিসেবে দায়িত্ব পান রুমানা আহমেদ। পরে তিনি পূর্ণ কর্মী হিসেবে নিয়োগ পান। হোয়াইট হাউসের ‘চ্যাম্পিয়ন অব চেঞ্চ’ প্রকল্পে কাজ করেছেন তিনি।
রুমানা আহমেদ আল অ্যারাবিয়াকে বলেন, তিনি কখনোই সরকারি চাকরিকে প্রথম পছন্দ হিসেবে নেননি। তবে ২০০৮ সালে বারাক ওবামার বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়ে তিনি মত বদলান।
রুমানার এ তথ্য এমন সময় সামনে এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে।
রিপাবলিকান দলের নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বিস্তারিত না জেনে কোনো মুসলিমকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেওয়া ঠিক হবে না।
বৈষম্যের শিকার হয়েছেন কি না জানতে চাইলে রুমানা বলেন, ‘সর্বশেষ নাইন-ইলেভেনের পর সেটা ঘটেছিল। আমি তখন সবে সরকারি স্কুলে হিজাব পরতে শুরু করেছি। নাইন-ইলেভেনের পর লোকজন আমাকে হয়রানি করতে শুরু করে। তবে সত্যি বলতে কি, আমি এসব নিয়ে মাথা ঘামাইনি।’
রুমানা বলেন, ‘হিজাবি হওয়ার কারণে আমি আরো বেশি ক্ষমতাবান বলে মনে করছি। কারণ লোকজন আমার কাছে এসে আমার দৃষ্টিভঙ্গি, এর পেছনের মূল্যবোধের কথা জানতে চান।’ তিনি বলেন, ‘প্রথমত আমার নিজেরই বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে আমি এই ভবনে আছি। লোকজন আমাকে দেখে কী ভাবে, তা নিয়ে আমি শুরুর দিকে কিছুটা বেশিই সচেতন ছিলাম।’
রুমানা তাঁর বসের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমার বস বেন রোডস আমাকে প্রেসিডেন্টের সামনে বহুবার হাজির হওয়ার দারুণ সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি যখনই সেখানে যাই, আমার বিস্ময় লাগে যে আমি তো হিজাব পরে দাঁড়িয়ে আছি।’
রুমানা সম্পর্কে বেন রোডস বলেন, ‘আমি প্রতিদিন রুমানার ওপর নির্ভর করি। তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ, এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য এমনকি কিউবার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নসহ প্রতিটি কাজে আমাদের সহায়তা করেন।’তিনি আরো বলেন, রুমানা তাঁর দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) এবং তাঁর ধর্মবিশ্বাসকে খুবই মূল্য দেন। তিনি একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন যে এ দুটোর মধ্যে কোনো সংঘাত নেই।’
সুত্র: ntv online
London Bangla A Force for the community…
