০৮ মার্চ, ২০১৬: জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলির দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে ১৯৭১ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ৬ জনকে নির্যাতন করে হত্যার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
তবে মুক্তিযোদ্ধা রণজিৎ দাস ও টুন্টু সেনকে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেলে ধরে নিয়ে নির্যাতন শেষে হত্যার দায়ে মীর কাসেমকে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিল বিভাগ তা বাতিল করে দিয়েছে। এছাড়া ২ নম্বর অভিযোগ ( একাত্তরের নভেম্বরে চট্টগ্রামের চাগতাই এলাকা থেকে লুৎফর ও সিরাজকে আটক করে নির্যাতন), ৩ নম্বর অভিযোগ (নভেম্বরে জাহাঙ্গীর আলমকে ধরে নিয়ে নির্যাতন) ৭ নম্বর অভিযোগ (ডবলমুরিং থানা থেকে সানাউল্লাহ চৌধুরী সহ ৩ জনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন), ৯ নম্বর অভিযোগ (২৯ নভেম্বর নুরুজ্জামান সহ ৭ জনকে অপহরণ ও নির্যাতন) ১০ নম্বর অভিযোগ (আসামির নির্দেশে জাকারিয়া সহ চারজনকে অপহরণ ও নির্যাতন) ও ১৪ নম্বর অভিযোগ (নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে আটক করে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতন এই সাত অভিযোগে মীর কাসেমকে দেয়া বিভিন্ন মেয়াদে যে কারাদণ্ড দিয়েছিল আপিল বিভাগ তা বহাল রেখেছে।
২ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর, ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর ও ৩,৭,৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছিল যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২। তবে ৪ ও ৬ নম্বর অভিযোগে মীর কাসেমকে ৭ বছর দণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। আপিল বিভাগ এই দুই অভিযোগ থেকে মীর কাসেমকে অব্যাহতি দিয়েছে আপিল বিভাগ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আলবদর কমান্ডার ও জামায়াতের শুরা সদস্য মীর কাসেম আলীকে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেয় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
বুধবার জামায়াতের হরতাল
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডের রায় আপিল বিভাগে বহাল রাখার প্রতিবাদে আগামীকাল বুধবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী।
মঙ্গলবার রায় ঘোষণার পর দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমেদ স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে হরতালের ডাক দেয়া হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার ষড়যন্ত্র করে পরিকল্পিতভাবে জামায়াত নেতাদের একের পর এক হত্যা করছে। সরকারি ষড়যন্ত্রের শিকার মীর কাসেম আলী। সরকার মিথ্যা, বায়বীয় ও কাল্পনিক অভিযোগে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করে নিজেদের দলীয় লোকদের মিথ্যা সাক্ষী বানিয়ে তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করার ষড়যন্ত্র করছে।