০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬: অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে (আইসিসি) তিন মোড়লের (ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড) রাজত্বের অবসান হতে চলেছে। আইসিসি থেকে এই তিনটি দেশের আধিপত্য শেষ করতে সংস্থাটির গঠনতন্ত্র ও প্রশাসনিক ক্ষমতায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। আইসিসির প্রশাসনে সুশাসন ও সদস্যদের স্বার্থ সংরক্ষণকে সবধরনের বিতর্কের উর্দ্ধে রাখার নিমিত্তে জন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে । বুধবার দুবাইয়ে আইসিসির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, আইসিসির স্বতন্ত্র অডিট কমিটির চেয়ারম্যানের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত চেয়ারম্যানের মেয়াদ হবে দুই বছর। কোনও চেয়ারম্যান তিনবারের অধিক মেয়াদে পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি কোনও সদস্য দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রাখতে পারবেন না। সংশোধনী গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জুন মাস থেকে গোপন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে আইসিসির চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও চেয়ারম্যানে পদে নির্বাচন করতে হলে সে ব্যক্তিকে অবশ্যই বর্তমান বা সাবেক আইসিসির নির্বাহী পরিষদের সদস্য বা ডিরেক্টর হতে হবে। এছাড়া প্রার্থীকে দুজন পূর্ণ সদস্যর সমর্থন জোগাড় করতে হবে। আইসিসির নির্বাহী কমিটি এবং ফিন্যান্স ও কমার্শিয়াল অবকাঠামোতেও পরিবর্তন আসছে। এই দুটি কমিটিতে আগের নিয়মানুয়ায়ী ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিনিধিদের স্থায়ী সদস্য পদ ছিল। কিন্তু সংশোধিত নিয়মানুয়ায়ী ২০১৬ সালের জুন মাস থেকে এই তিন ক্রিকেট শক্তির স্থায়ী পদ বিলুপ্ত হবে। এই পরিবর্তনটি আনা হয়েছে যাতে আইসিসির যে কোনও পরিচালক নিজ যোগ্যতা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার প্রমাণ রেখে কমিটিতে স্থান করে নিতে পারেন। এছাড়া কমিটিগুলোতে যাতে আইসিসির প্রত্যেক সদস্য ও সহযোগী সদস্যদের সমান সুযোগ থাকে সে জন্য এই সংশোধনী আনা হচ্ছে। আইসিসির বর্তমান চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহরের নেতৃত্ব পাচ সদস্য বিশিষ্ট স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এপ্রিল মাসে একটি সভার মাধ্যমে তারা সংশোধনী সংক্রান্ত কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারেন। বিশ্বব্যাপি ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে এখন থেকে আইসিসি নির্বাহী কমিটির বাৎসরিক চারটি সভার তিনটি দুবাইয়ের বাইরে বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে করে ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আইসিসির সক্রিয় যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। এ প্রসঙ্গে শশাঙ্ক মনোহর বলেন, আমরা বেশ কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ একটি সভা করেছি। আইসিসিতে স্বচ্ছতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন থেকে আইসিসির সব সদস্যই সমান। কেউ কারও চেয়ে বড় নয়। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সাবেক চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসনের আমলে আইসিসির গঠনতন্ত্রে যেসব সংশোধনী আনা হয়েছিল তাতে তিন মোড়লের (ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড) আধিপত্য বিস্তারের ব্যপক সুযোগ ছিল। কিন্তু নতুন এই সিদ্ধান্তে খর্ব হচ্ছে তাদের আধিপত্য।
সূত্র: প্রিয়.কম