১৪ নভেম্বর ২০১৫: ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সিরিজ বোমা হামলায় কমপক্ষে ১৫৩ জন নিহত হয়েছে। বিবিসি জানায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবার পুরো দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং বন্ধ করা হয়েছে সীমান্ত, লোকজনকে ঘর থেকে বের হতে বারণ করা হয়েছে। পুরো প্যারিস ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
প্যারিসের ছয়টি স্থানে সংঘবদ্ধ হামলার ঘটনায় নিহতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১২ জন মানুষকে হত্যা করা হয় বাটাক্লান থিয়েটার হলে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন একটি রেডিও’র সংবাদদাতা জুলিয়ান পিয়েরসি। তিনি বলেন, ‘হামলার ওই স্থানটিতে রক্তগঙ্গা বয়ে যায়।’ থিয়েটারে যাওয়া জুলিয়ান বলেন, ‘টানা ১০ মিনিট পর্যন্ত মানুষ ছিল একটি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে। তারা আতঙ্কে তীব্র চিৎকার করছিলো।’
জুলিয়ান জানান, হামলা শুরুর সময় স্টেজের কাছেই ছিলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এ সময় অস্ত্রধারী দুই সন্ত্রাসী হলরুমে প্রবেশ করে। তারা ছিল খুবই শান্ত ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তারপরই এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে তারা। হামলাকারীরা ছিল কালো পোশাক পরা। তাদের মুখোশ ছিল না।’
তিনি এক হামলাকারীর মুখ দেখেছেন বলে জানান। সে ছিল খুবই তরুণ। তার বয়স বছর পঁচিশেক হবে। কালাশনিকভ হাতে এতোপাতাড়ি গুলি শুরু করে সে।জুলিয়ান বলেন, ‘হামলাকারীরা কনসার্ট রুমের পেছনে দাঁড়িয়ে গুলি চালানো শুরু করে। তারা কোন ধরনের নড়াচড়া করছিল না। এক নাগাড়ে গুলি করে যাচ্ছিল আমাদের দিকে। এমনভাবে তারা গুলি করছিল, যেন আমরা এক ঝাঁক পাখি!’
তিনি আরো জানান, এ সময় তিনি আশপাশের মানুষকে বলেন, তারা যেন মৃতের ভান করে শুয়ে পড়ে। পাঁচ মিনিট হামলার পর থামে হামলাকারীরা। তারা বন্দুকে গুলি ভরে। এ সময় পালিয়ে যান অনেক মানুষ। জুলিয়ানও একটি পথ পেয়ে বেরিয়ে যান। বের হওয়ার সময় দুটি গুলি আক্রান্ত একটি মেয়েকে পেয়ে তাকে টেনে বের করেন তিনি।
পরে রাস্তায় ২০ জনকে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। তাদের বেশিরভাগই ছিলেন মৃত বা মারাত্মকভাবে আহত। সেখানে কোন পুলিশকে দেখা যায়নি।
জুলিয়ান বলেন, ‘পুরো ঘটনাটি ছিল খুবই ভয়ঙ্কর ও ভয়াবহ। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল যৎ সামান্য।
এদিকে, ভিন্ন এক প্রত্যক্ষদর্শী রেডিও ফ্রান্সকে জানান, হামলাকারীরা গুলি করছিল ও ‘আল্লাহু আকবার’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল।
সূত্র: সিএনএন।