১২ নভেম্বর, ২০১৫: পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যায় অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মেয়ে ঐশী রহমানের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় সহযোগী মিজানুর রহমান রনির দুই বছরের কারা দণ্ড এবং অপর আসামী আসাদুজ্জামান জনিকে খালাশ দেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এই রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে গত ৪ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ রায়ের জন্য এদিন নির্ধারণ করেছিলেন।
অপর আসামি গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটির বিচার চলছে শিশু আদালতে।
এ মামলায় ৫৭ সাক্ষীর মধ্যে বাদী ঐশীর চাচা মো. মশিহুর রহমান রুবেলসহ ৩৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
গত ১৩ অক্টোবর মামলাটির প্রধান আসামি ঐশীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেন আদালত। আত্মপক্ষ সমর্থনকালে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তার বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে দাখিল করেন ঐশী। অন্য দুই আসামি জনি ও রনিও নিজেদের নিদোর্ষ বলে দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।
বয়সের সমর্থনে একটি সনদপত্র আদালতে দাখিল করে ঐশী দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। পুলিশ নির্যাতন করে তার স্বীকারোক্তি আদায় করে। তার বাবা-মা যখন খুন হন তখন তিনি বাসায় ছিলেন না। বন্ধুর বাসায় হুইস্কি খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। তার বাবা-মাকে কে বা কারা খুন করেন তাও তিনি জানেন না।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করে। পরে গ্রেফতার করা হয় অন্য দুই আসামি রনি ও জনিকে।
মামলাটিতে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ডিবির ইন্সপেক্টর মো. আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত বছরের ৬ মে ঐশীসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন মহানগর দায়রা জজ আদালত।
২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন ঐশী। পরে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছিল দাবি করে ৫ সেপ্টেম্বর স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। আদালত তা নথিভূক্ত রাখার নির্দেশ দেন।
ঐশীদের মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হলে গত বছরের ৩০ নভেম্বর নতুন করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার প্রায় ১ বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হবে।