৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫: উবু হয়ে তুরষ্কের সৈকতে পড়ে আছে উজ্জ্বল লাল টি-শার্টের সাথে নীল হাফপ্যান্ট পড়া শিশুটির প্রাণহীন দেহ। এ একটি ছবিই বলে দিচ্ছে ইউরোপজুড়ে অভিবাসন সঙ্কট কতটা চরমে পৌঁছেছে। বিশ্বজুড়ে মানুষের বেদনার কারণ হয়েছে প্রাণহীন এই শিশুটি। নিজের প্রাণ দিয়ে হলেও শিশুটি বিশ্ববাসীকে অভিবাসীদের সত্যিকার অবস্থা এবং তাদের ভবিষ্যত বিষয়ে আরেকবার ভাবতে সাহায্য করেছে।
তুরস্কের উপকূলে ভেসে আসা সিরিয়ার যে শিশুটির মরদেহ সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে সেই আয়লানকে আজ তার নিজের শহরে দাফন করা হচ্ছে। আয়লান কুর্দীর পিতাকে তার তিন বছর বয়সী পুত্রের কফিনসহ তুরস্ক থেকে সীমান্তবর্তী সিরিয়ার কোবানি শহরে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শিশু আয়লানের পাশাপাশি তার মা ও বড় ভাইকেও দাফন করা হচ্ছে। তুরস্কের একটি সমুদ্র সৈকতে আয়লানের নিথর মরদেহ পড়ে থাকার ছবি সিরিয়ার শরণার্থীদের দুঃখ দুর্দশার কথা সারা বিশ্বের মানুষকে মনে করিয়ে দিয়েছে।
ছবিতে দেখা যায় সমুদ্র সৈকতে লাল জামা গায়ে একটি ছোট শিশুর নিথর দেহ উপুড় হয়ে পড়ে আছে। তুরস্কের বদ্রুম উপকূলে সাগর সৈকত থেকে এই ছবি তুলেছে সে দেশের একটি বার্তা সংস্থা। শিশু আয়লানসহ অভিবাসীদের একটি দল নৌকায় করে গ্রিসের একটি দ্বীপে যাওয়ার চেষ্টা করলে নৌকাটি ডুবে যায় এবং ১২ জন নিহত হয়। তার মা এবং পাঁচ বছর বয়সী বড় ভাই এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। আয়লানের পিতা আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, নৌকাটি তুরস্ক ছেড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বড় বড় ঢেউয়ের মুখে পড়ে। তখন চালক সাতরে চলে যান। পরে নৌকাটি ডুবে যায়।
তুর্কি নিউজ এজেন্সি ডোগান দাবি করেছে, শিশুটির বাড়ি সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর কোবানিতে। গত বছর শহরকি পুনর্দখল করে আইএস। আয়লানের পরিবারটি সিরিয়ার বোডরাম থেকে বিশজনের একটি ছোট একটি কাঠের নৌকায় করে গ্রিক দ্বীপ ‘কস’ এ পাড়ি দিচ্ছিলেন। যাত্রার আগে নিরাপদে পৌঁছানোর অঙ্গীকার করা হয়েছিলো তাদের কাছে।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাড়ি দিতে চেয়ে অন্তত আড়াই হাজার অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।