বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক আব্দুর রাজ্জাককে নাফ নদী থেকে অপহরণের ঘটনা সাংবাদিকদের কাছে বর্ণনা দিলেন বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজিবির পিলখানা সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক জানান, ১৭ জুন ভোর রাতে নদীতে বিজিবির দুটি নৌকায় ৩ জন করে ৬ জন টহল দিচ্ছিল। তাদের দলনেতা ছিল রাজ্জাক। প্রায় ৫০০ গজ দূরত্বে নৌকা দুটি টহল দিচ্ছিল।
ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নদীতে একটি নৌকা দেখে সন্দেহ হলে সেটিতে তল্লাশি করে বিজিবি সদস্যরা। এরপরেই সাদা পোশাকে মিয়ানমার থেকে আরেকটি নৌকা ঘটনাস্থলে আসে এবং বিজিবি সদস্যদের উপর এলোপাথরি গুলি ছুঁড়তে থাকে। এতে বিজিবির সিপাহী বিপ্লব গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হন। এ ঘটনার সময় অন্যরা পানিতে পরে গেলে রাজ্জাককে তুলে নিয়ে যায় বিজিপির সদস্যরা। ঘটনাস্থল থেকে মিয়ানমারের সীমান্তের দূরত্ব ছিল মাত্র ১৫০ গজের মত। বিজিবির আরেকটি নৌকা আসার আগেই তারা রাজ্জাককে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এদিন বিজিবির দুটি টহল নৌকার মধ্যে ১ থেকে দেড়শ গজের দূরত্ব থাকার কথা থাকলেও তাদের দূরত্ব ৫০০ গজের বেশি ছিল। কেন তারা এত বেশি দূরত্বে অবস্থান করছিলো। বিষয়টিও যাচাই করে দেখা হবে বলে জানান আজিজ আহমেদ।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘অপহরণের দেড় ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাটি জানাজানি হলে সব মহল থেকে রাজ্জাককে ফিরিয়ে দেয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়। ১৮ জুন তাদের লিখিত প্রতিবাদ, ১৯ জুন পতাকা বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে উপরের নির্দেশ না পাওয়ায় বৈঠকে বসবে না বলে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।’
অবশেষে বৃহস্পতিবার তারা পতাকা বৈঠকে রাজি হয় এবং অস্ত্র, মোবাইল, ইউনিফর্ম, টর্চসহ সব আনুসাঙ্গিক জিনিসসহ রাজ্জাককে ফেরত দেয় বিজিপি। এঘটনায় বিজিপি সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দেয়ার আহ্বান জানানো হয় বিজিবির পক্ষ থেকে।
‘জিরো লাইন’ লঙ্ঘন করার অভিযোগে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক আব্দুর রাজ্জাককে অপহরণ করার হয়েছিল বলে দাবি মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি)। তবে তাদের এই অভিযোগ মিথ্যা এবং বিজিবির পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করে বলা হয়েছে, বিজিবি নয় বিজিপিই ‘জিরো লাইন’ অতিক্রম করেছে।
গত ১৭ জুন নায়েক রাজ্জাককে নাফ নদী থেকে অপহরণ করে বিজিপি। আট দিন পর বৃহস্পতিবার তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়।
পতাকা বৈঠকে অপহরণের সময় রাজ্জাক ইউনিফর্মে ছিলেন না বলে অভিযোগ করে বিজিপি। এই বিষয়টিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয় বলে জানান আজিজ আহমেদ।
[Adverts]
London Bangla A Force for the community…
