কারী শিল্পের সংকট সমাধানে কার্যকর ক্যাম্পেইন চালিয়ে নিতে অঙ্গিকার করেছে বাংলাদেশ ক্যাটারাস এসোসিয়েশন বিসিএ। অল পার্টি পার্লামেন্টারী গ্রুপ ফর কারী ইন্ডাস্ট্রির সভায় অংশ নিয়ে এমন অঙ্গিকার ব্যক্ত করলেন বিসিএ নেতৃবৃন্দ। গত ৩ মার্চ মঙ্গলবার হাউজ অব লর্ডসে গ্রুপের দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় যোগ দেন বেশ কয়েকজন বৃটিশ লর্ডস এবং পার্লামেন্ট মেম্বার। এ সময় কারী শিল্পের সংকট সমাধানে নিজেদের আন্তরিকতার কথা জানান বৃটিশ রাজনীতিবিদরা।
অল পার্টি পার্লামেন্টারী গ্রুপ ফর কারী ইন্ডাস্ট্রির চেয়ার ব্যারোনেস পলা উদ্দিনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন এপিপিজি‘র ভাইস চেয়ার লর্ড শেইখ, ট্রেজারার লর্ড কারেন বিলুমুরিয়া,লর্ড নাজির আহমদ, হোম অফিস মিনিস্টার মাইক পেনিং এমপি, কনজারভেটিভ পার্টির ভাইস চেয়ার রিচাড হেরিংটন এমপি, সলিসিটর জেনারেল রবার্ট বার্কলেন এমপি, গেবিন বারওয়াল এমপি, রবার্ট হলফেন এমপি, পিটার কেম্বারলি এমপি, জিম ফিজপেট্রিক এমপি এবং যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএ‘র প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকার।
সভার শুরুতেই ব্যারোনেস পলা উদ্দিন ও পাশা খন্দকার অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের সামনে কারী শিল্পের বিরাজমান সমস্যা তুলে ধরেন। রেস্টুরেন্টে ভিএটি বৃদ্ধি, হাই স্ট্রীট ব্যাংকগুলোর অসহযোগিতা, দক্ষ শেফ সংকট এবং রেস্টুরেন্টের ব্যস্ত সময়ে ইমিগ্রেশন রেইডের কারনে কারী শিল্পের যে ক্ষতি হচেছ তা সমাধানে ্এমপি ও লর্ডসদের সহযোগিতা কামনা করেন।
লর্ড শেইখ বলেন, বৃটেনে বাঙালীর অর্জন অনেক। এই অর্জনের একটি বড়ো দিক হচেছ কারী ইন্ডাস্ট্রি। যে কোন মূল্যে বাংলাদেশীদের এই শিল্পকে রক্ষা করতে হবে। তিনি তার সহকর্মী ও বৃটিশ রাজনীতিবিদদের এই সমস্যা সমাধানে ভ’মিকা রাখার আহবান জানান।
হোম অফিস মিনিস্টার মাইক পেনিং এমপি বলেন, বৃটিশ জনগনের খাদ্য অভ্যাসের একটি অবিচেদ্য অংশ বাংলাদেশী কারী হাউজ। এই কারী হাউজের যে সংকটের কথা বলা হচেছ, তা সমাধানের ব্যাপারে সকলের আর্ন্তরিকতা রয়েছে। এই নিয়ে প্রয়োজন কার্যকর ডায়লগ। রেস্টুরেন্টগুলে ঠিকে থাকলেও শুধু মালিকরা লাভবান হবেনা বরং সরকারও এ থেকে রাজস্ব পাবে। তাই সকলের উচিত এই ইন্ডাস্ট্রির সমস্যা সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করা। তিনি নিজে হোম সেক্রেটারীর কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী জানাবেন বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
বিসিএ‘র প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকার বলেন, বাংলাদেশী কারীকে দারুন পছন্দ করেন বৃটিশ জনগন। এই কারনেই এই ইন্ডাস্ট্রি ঠিকে আছে। কিন্তুু নানামুখি চাপে এই শিল্প বার বার সংকটের মুখে পতিত হচেছ। বিসিএ‘র পক্ষ থেকে বার বার সংকট সমাধানের আওয়াজ তুলা হলেও বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন হচেছনা। তিনি বৃটিশ জনপ্রতিনিধিদের কাছে আহবান জানান, তারা যাতে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহন করেন। বিশেষ করে, রেস্টুরেন্টের ব্যস্ত সময়ে ইমিগ্রেশন রেইডকে অবৈধ রেইড বলে অভিহিত করেন পাশা খন্দকার।
বিসিএ‘র সেক্রেটারী জেনারেল এম এ মুনিম বলেন, বৃটেনের জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র ২ মাস বাকী। এই সময়ের মধ্যে সকল এমপি প্রার্থীদের কাছে বিসিএ‘র পক্ষ থেকে দাবী জানানো উচিত যাতে তারা এই ইন্ডাস্ট্রির পক্ষে কথা বলেন। তিনি সকল রিজিওনাল লিডারদের প্রতি আহবান জানান তারা যেন নিজ নিজ এলাকায় ক্যাম্পেইন অব্যাহত রাখেন।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের কন্সুলার মিনিস্টার শরিফা খান, বাংলাদেশ বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার আতিক রহমান চিশতী, ইউরো ফুডের স্বত্তাধিকারী সেলিম হোসেন এমবিই। বিসিএ‘র কেন্দ্রীয় ও রিজিওনাল কমিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফজল উদ্দিন, মুজাহিদ আলী চৌধুরী, এনামুল হক চৌধুরী, ওলি খান, ইউসুফ সেলিম, আনিছ চৌধুরী, সাইফুল আলম, নুরুল হক জেপি, ফয়জুল হক, গোলাম রব্বানী, মাসুদ আহমদ, আব্দুল কাদের ও বিসিএ‘র অফিস এক্সিকিউটিভ আলী বাবর প্রমুখ।