ব্রেকিং নিউজ
Home / প্রচ্ছদ / আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা করছে, ভোর থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে যান : তারেক রহমান

আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা করছে, ভোর থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে যান : তারেক রহমান

লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভায় তারেক রহমান
——————————————–
• ভোট ডাকাতির ষড়যন্ত্র চলছে, ভোর থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে যান
• সেনাবাহিনী সঠিক কাজটিই করবে এজন্যই সেনা মাতায়েন করা হয়নি
• নির্বাচন কমিশন বেহায়া মেরুদন্ডহীন
• দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়া, চ্যালেঞ্জ করতে চাইলে র‌্যাব পুলিশ ছেড়ে আসুন

লন্ডন, ২৬ এপ্রিল : বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচনে কারচুপির ষড়যন্ত্র চলছে। আওয়ামী লীগ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট সকাল ৮টার আগেই কাস্ট করে রাখার পরিকল্পনা করছে। তারা জানে, ভোট চুরি কিংবা ভোট ডাকাতি ছাড়া তারা কখনো জয়ী হতে পারবে না। ভোট চুরি করতে না পারলে দেশে আওয়ামী লীগের অস্তিত্বই টিকিয়ে রাখাই কষ্টকর হয়ে পড়বে। ভোটারদের প্রতি আহবান আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান সবাই ভোর ৬টা থেকেই ভোট কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে যাবেন। ভোটের ফলাফল নিয়ে বাসায় ফিরবেন। রোববার ইস্ট লন্ডনে অট্রিয়াম অডিটোরিয়ামে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ।
নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, মোবাইল ফোনে ছবি তুলুন, ভিডিও রেকর্ড করুন। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের ভেতরে বাইরে অনিয়ম-অপকর্ম ও ভোটচুরির তথ্যচিত্র, দলিল-প্রমাণ ধারণ করে গণমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দিন।
image
তারেক রহমান বলেন, জনগণের দাবি ছিল সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সেনা মোতায়েন করা। কিন্তু বর্তমান নির্বাচন কমিশন নির্লজ্জ বেহায়া ও মেরুদন্ডহীন। তারা নিরপেক্ষ নয়। তারা প্রথমে সেনা মোতায়েনে রাজি হলেও পরে আবার সেনা বাহিনীকে ক্যান্টনমেন্টেই স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রেখে দিয়েছে। রিটার্নিং অফিসার প্রয়োজন মনে করলে নাকি সেনা বাহিনীকে ডাকবেন। শেখ হাসিনাকে সন্ত্রাসী উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বাস্তবতা হলো, শেখ হাসিনা না চাইলে কোনো রিটার্নিং অফিসার সেনা বাহিনীকে ডাকার সাহস করবেনা। এটি জনগণের সঙ্গে ভাওতাবাজি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভালো করেই জানে, সেনা বাহিনীকে মাঠে রাখা হলে তারা সঠিক কাজটিই করবে। আর সঠিক কাজটি করলে জনগণের রায় আওয়ামী লীগের পক্ষে যাবেনা। তখন রায় আসবে জনগণের পক্ষে। যে নেত্রী রাস্তায় নামলে জনগণের ঢল নামে জনতার রায় আসবে তাদের পক্ষে। তারেক রহমান অভিযোগ করে বলেন, বিডিআর পিলখানায় হত্যাকান্ডের সময়ও শেখ হাসিনা বলেছিলো, সেনা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছিলো। এই সেনা বাহিনীকে প্রস্তুত রেখেই ৫৭ জন সেনা অফিসারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল পিলখানায়। এর বিচার একদিন বাংলার মাটিতে হবেই।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব কমরউদ্দিনের চতুর্থ মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় তারেক তিনি আরো বলেন, বিএনপির পক্ষে জনসমর্থনের জোয়ার নেমেছে। এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। কেউ যদি চ্যালেঞ্জ করতে চান, তাহলে র‌্যাব-পুলিশ রেখে জনগণের সামনে আসুন। জনগণ প্রমাণ দেবে। তারেক রহমান বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপর হামলা হয়েছে। কারা কিভাবে হামলা করেছে, তাদের প্রত্যেকের নাম ঠিকানা ও পরিচয় গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু চিহ্নিত এইসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কারণ এই হামলায় সরাসরি শেখ হাসিনার ইঙ্গিত ছিল। তারেক রহমান বলেন, দেশের উচ্চ আদালত শেখ হাসিনাকে ‘রং হেডেড’ বলে রায় দিয়েছিলেন। চলমান বাস্তবতায় প্রমাণিত হয়েছে, বিচারক সঠিক রায়টিই দিয়েছিলেন।

তারেক রহমান আরো বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। দুর্নীতি পরায়ণ, খুন-গুমের রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। এই দলের নেতারা দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশকে লুটেরা রাষ্ট্রের পরিচয় এনে দিয়েছে। তথাকথিত বিরোধী দলের এমপিদের মন্ত্রীসভায় রেখে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক বিশ্বের সামনে হাস্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
থারেক রহমান আরো বলেন, দেশের প্রতি আওয়ামী লীগের কোনো দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নেই। তারা বিদেশে গাড়ী বাড়ী করেছে। যে কোনো সময় তারা বিদেশে পালাবে। কিন্তু দেশের কোটি কোটি জনগনকে দেশেই থাকতে হবে। এই অবস্থায় সিটি নির্বাচনকে চলমান অবৈধ সরকার বিরোধী আন্দোলনের দ্বিতীয় ধাপ হিসেবে উল্লেখ করে তারেক রহমান দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই খুনীদের বিরুদ্ধে শুধু বিএনপি কিংবা বিরোধী দলীয় জোটই নয়, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রতিটি দল-মতের মানুষকে অংশ নেয়া এখন সময়ের দাবি।

তারেক রহমান বলেন, সম্প্রতি উৎসবে নারীদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে একজন ব্লগারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এসব কিছুই হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে। সাভারে ব্যাংক ডাকাতি হয়েছে। এই ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত হিসেবে গোপালগঞ্জের এক আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজার নাম এসেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ব্যাংক ডাকাতি আওয়ামী লীগের রক্তে প্রবাহিত, এটা তাদের মজ্জাগত অভ্যাস।

তারেক রহমান আরো বলেন, আওয়ামী লীগ নামটি এখন জনগনের কাছে গালিতে পরিণত হয়েছে। তাদের নেতা শেখ মুজিব আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় এসে তিনি গণতন্ত্র হত্যা করেছেন। বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছেন। এমনকি নিজ দল আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। মাত্র চারটি সংবাদপত্র ছাড়া দেশের সকল সংবাদপত্রের প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়েছিেেলন। তারা ক্ষমতার জন্য যা ইচ্ছা তাই বলে, যা ইচ্ছা তাই করে। শেখ হাসিনাও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতির জন্য আন্দোলন করেছিল। কিন্তু ক্ষমতা যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আওয়ামী লীগ কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করে স্বৈরাচারের পথ বেছে নিয়েছে।
তারেক রহমান অভিযোগ করে বলেন, দেশে এখন আইনের শাসন নেই। র‌্যাবকে পরিণত করা হয়েছে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনে। তারা এখন মানুষ খুন ও গুমের সঙ্গে জড়িত। শুধু তাই নয়, র‌্যাব এখন ভাড়াটিয়া বাহিনী হিসেবেও মানুষ খুন করে। এক অবৈধ মন্ত্রীর মেয়ের জামাতা নারায়ণগঞ্জে নিজ দলের নেতাদেরকেও টাকার বিনিময়ে হত্যা করেছে।
তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ জানে, জনগণের নির্বাচিত সরকার থাকলে সাগর-রুনিসহ দেশের সকল হত্যাকান্ডের বিচার হবে। কুইক রেন্টালের নামে অবৈধভাবে কুইক মানি আয়ের বিচার হবে। বিচার হবে শেয়ারবাজার কেলেংকারি ও পদ্মা সেতু দুর্নীতির। বিচার হবে খুন, গুম, অপহরণ এবং আওয়ামী লীগের সকল অপকর্ম ও অনিয়মের। এসব কারণেই নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে তাদের এতো ভয়।
তারেক রহমান বলেন, এই স্বৈরাচারকে হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিএনপি ও জোটের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছেন, গুম হয়েছেন, খুন হয়েছেন, কষ্ট স্বীকার করছেন। তিনি বলেন, এই নিকৃষ্টতম স্বৈরাচারকে হটিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায়, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায়, সবার জন্য একটি নিরাপদ সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় গনতন্ত্রকামী জনগণকে আরো কষ্ট স্বীকার করতে হবে। তবে ইতিহাস স্বাক্ষী, কোনো স্বৈরাচারই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। হতে পারে না। শেষ পর্যন্ত বিজয় হয় জনগণের। বিজয় হবে গণতন্ত্রের।