চাইলে লোটাকম্বল নিয়ে এখনই তৈরি হয়ে থাকতে পারেন কলকাতাবাসী। কারণ যেকোনো মুহূর্তে তলিয়ে যেতে পারে গোটা কলকাতা। তবে নয় কোনো পরমাণু বোমা কিংবা নয় কোনো জলোচ্ছাস। স্রেফ ভূমিকম্পের কারণেই শত বছরের পুরনো এই শহর তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ভারতীয় ভূতাত্ত্বিকরা। গত শনিবারের ভয়ংকর ভূমিকম্পের পর তাই মুখ খুললেন ভারতীয় গবেষকরা।
গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার ভূমিকম্প হয়েছে এই অঞ্চলে। ভারতের সিকিম, ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ইত্যাদি এলাকায় অনেকবার মৃদু ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যদিও এই ভূমিকম্পগুলোর প্রত্যেকটিই প্রায় ৪ দশমিক ১ মাত্রার নিচে। তবুও ২০১৩ সালের ১ জুন যে ভূমিকম্প হয়, তাতে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, বাংলাদেশসহ পশ্চিমবঙ্গ মোটেও নিরাপদ নয় ভূমিকম্প থেকে। এবিষয়ে ভূতাত্ত্বিকরা অনেকবার জানিয়েছেন যে, কলকাতার তলদেশ দিয়ে চলে যাওয়া গ্র্যাভিটি ফল্ট-ইয়োসিন হিঞ্জে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে। এখন সহজেই অনুমান করে নেয়া যায় যে, নেপালের ভূমিকম্পেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে খোদ কলকাতার বুকে ভূমিকম্প হলে কি অবস্থা হবে।
কলকাতার খড়গপুর আইআইটি’র ভূতত্ত্ববিদ শঙ্করকুমার নাথ বলেন, ‘ভূমিকম্প হলে কোন জায়গা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সেটা আমরা সিসমিক জোনের ম্যাপ বিশ্লেষণ করে হিসেব করেছি। বর্ধমান, আসানসোল, দুর্গাপুর, কলকাতাসহ দেশের মোট ৪২টি শহরে চার বছর ধরে আমরা গবেষণা করছি। এখনও পুরো রিপোর্ট তৈরি হয়নি, কিন্তু এটা বলা যায় যে সল্টলেকের অবস্থা খুব খারাপ।’
চলতি বছরের মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১৩বার ভূমিকম্প হয়েছে গোটাবিশ্বে। সে হিসেবে সামনের দিনগুলো যে একেবারেই ভূমিকম্পহীন সময় কাটবে তা বলা একেবারেই মুশকিল। খোদ কলকাতাকে ভূতত্ত্ববিদরা মোট চারটি সিসমিক জোনে বিভক্ত করেছে। আর এই চারটি জোনই ভূমিকম্পের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল। বিশ্লেষকদের মতে, কলকাতায় ভূমিকম্প হলে গোটা কলকাতা প্রায় সাত কিলোমিটার পুরু কাদামাটিতে ডুবে যাবে, কারণ কলকাতার নিচেই রয়েছে দীর্ঘ কাদামাটির স্তর।