সম্প্রতি কওমি মাদ্রাসা নিয়ে মন্তব্যের কারণে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে দেশের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো। এরইমধ্যে অর্থমন্ত্রীকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে অপসারণের দাবিও করেছে তারা। অন্যথায় কর্মসূচি আসতে পারে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতারা।
সম্প্রতি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনাসভায় মুহিত বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসা অ্যান্ড ইটস সিসটেমস আর টেরিবলি ডেঞ্জারাস। বর্তমান কওমি মাদ্রাসা সরকারের কাছ থেকে কোনও অর্থ নেয় না। ফলে তারা সরকারের নিয়ন্ত্রণেও নেই।’ মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে আনা হবে কিনা সে ব্যাপারে সরকার ভাববে বলেও জানান মুহিত।
অন্যদিকে আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকেই দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোকে করের আওতায় আনার পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলের সম্মতি পেলেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
জানা গেছে, মাদ্রাসার সংখ্যা নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান নেই সরকারের হাতে। তবে বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা বোর্ড ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার (বেফাক) দেওয়া তথ্যমতে, দেশে কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা ৪৫ হাজারেরও বেশি। ছাত্রসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। শিক্ষক আছে ১০ হাজারেরও বেশি। স্বাধীনতার ৪২ বছরেও সরকারিভাবে এ সংক্রান্ত কোনও জরিপ হয়নি। কওমি মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসা দেশের জন্য আশির্বাদ। কওমি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে নয়, অর্থমন্ত্রী ইসলামের বিরুদ্ধেই দাঁড়িয়েছে। এমন মন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করা প্রয়োজন।’
ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ আরও বলেন, ‘মুহিত বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপ্রচেষ্টায় লিপ্ত। ভার্সিটিতে পড়ে এমন অনেকেই আইএস-এ যোগ দিতে গিয়েছে, কিন্তু কোনও কওমি মাদ্রাসার ছাত্র আইএস-এ যোগ দেয়নি। নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরিরে কোনও মাদ্রাসার ছাত্র নেই। এখন পর্যন্ত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েই তাদের কর্মকাণ্ড দেখা গেছে। অথচ এসব নিয়ে অর্থমন্ত্রী ভাবছেন না।’
মাদ্রাসার পরিসংখ্যান প্রসঙ্গে গওহরডাঙ্গা কওমি মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা রুহুল আমীন বলেন, ‘সরকার চাইলেই মাদ্রাসার পরিসংখ্যান করতে পারে। তবে এজন্য মাদ্রাসা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। মাদ্রাসা সরকারের কাছ থেকে টাকা নেয় না, এতে সমস্যার কারণ নেই। মাদ্রাসার আয়-ব্যয়ের হিসাব হয়। চাইলে সরকার দেখতেও পারে।’
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার বিরোধিতা করা হচ্ছে দেশকে নাস্তিকায়নের জন্য। ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে এনজিওগুলো অযৌক্তিক অভিযোগ এনে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। অর্থমন্ত্রীকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে ইসলামপ্রিয় মানুষ গর্জে উঠবে।’
অর্থমন্ত্রীর অপসারণের দাবি ইসলামি ঐক্যজোটেরও। দলটির মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী মুহিত কওমি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছেন। তাকে মন্ত্রীপরিষদ থেকে অপসারণ করতে হবে। কওমি মাদ্রাসাপড়ুয়াদের মাধ্যমে নির্মিত হয় শ্রেষ্ঠ সভ্যতা। এখান থেকেই তৈরি হচ্ছে আদর্শ চরিত্রবান, আলোকিত মানুষ। তাই নাস্তিক্যবাদী অপশক্তি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে করছে। অর্থমন্ত্রীকে অপসারণ না করলে আমারা আন্দোলনে যাব।’
অর্থমন্ত্রী কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কে জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসা বিপজ্জনক নয়, বরং আল্লাহর দুনিয়ায় মাদ্রাসা হচ্ছে মানুষের জন্য বিপদমুক্তির জায়গা। অর্থমন্ত্রী যদি মাদ্রাসা সম্পর্কে না জানেন তবে উনার উচিত আলেমদের সঙ্গে কথা বলে কওমি মাদ্রাসাকে জানা।’
source: বাংলা ট্রিবিউনক
কওমি মাদ্রাসা সরকারের কাছ থেকে কোনও অর্থ নেয় না। ফলে তারা সরকারের নিয়ন্ত্রণেও নেই।////
বিপদের কথা ! সরকার তাদের আওয়ামি লিগার বানাইতে পারবেনা !!
কওমি মাদ্রাসা সরকারের কাছ থেকে কোনও অর্থ নেয় না। ফলে তারা সরকারের নিয়ন্ত্রণেও নেই।////
বিপদের কথা ! সরকার তাদের আওয়ামি লিগার বানাইতে পারবেনা !!