খালেদা জিয়ার ফাঁসি চাওয়াটাই এখন একমাত্র কর্মসূচি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই বাংলার মাটিতে আগুন-সন্ত্রাসী খালেদা জিয়ার ফাঁসি কার্যকর হবে।’
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে বিএমএ মিলনায়তনে শ্রমিক, কর্মচারী, পেশাজীবী, মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের সমাবেশে মন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে আগুন-সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তাঁর ফাঁসির দাবিতে আগামী ৫ এপ্রিল গণপদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন পরিষদের আহ্বায়ক ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।
সমাবেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া দেশজুড়ে আগুন-সন্ত্রাস চালিয়ে রাজনীতির ভিলেনে পরিণত হয়েছেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছিলাম, আর বর্তমানে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের ভেতরে আছি। দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণরূপে আগুন-সন্ত্রাসীদের খপ্পর থেকে মুক্ত করব। জঙ্গিবাদীদের খপ্পর থেকে মুক্ত করব।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের সমালোচনা করে ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশের ট্রেনে আমরা সবাই আছি, বেগম খালেদা জিয়া নিজেই ইচ্ছে করে পাকিস্তান, আফগানিস্তানের ট্রেনে উঠেছেন। আমাদের কিছু করার নাই। বেগম খালেদা জিয়াকে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের ট্রেনে ধাক্কা দিয়ে পাঠিয়ে দিতে হবে।…সুতরাং আজকে আমি আবারও বলব, আমাদের একটাই পথ। এই মুহূর্তে আগে বাংলাদেশকে নিরাপদ করি। বাংলাদেশকে শান্তি দিই। তারপরে রাজনীতি, গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা হবে। আর দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত, আগুন সন্ত্রাসীদের সঙ্গে, খুনিদের সঙ্গে, আগুন-সন্ত্রাসী নেত্রী খুনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো সংলাপ, আলোচনা, ফয়সালা হতে পারে না।’
খালেদা জিয়ার স্থান কারাগারে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি তাই বলি, বেগম খালেদা জিয়ার জায়গা সংলাপের টেবিল নয়, কাশিমপুর কারাগার। প্রিয় বন্ধুরা, তাই আমি আহ্বান জানাব আজকে আপনাদের আপনাদের নেতৃবৃন্দকে, আসুন সারা দেশে আমরা যেমন যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই বলে গণজাগরণ তৈরি করেছিলাম, এই মুহূর্তে বাংলাদেশকে শান্তি দিতে হলে আসুন একসঙ্গে আওয়াজ তুলি, আগুন-সন্ত্রাসীদের ফাঁসি চাই, খালেদা জিয়ার ফাঁসি চাই। এটাই একমাত্র কর্মসূচি হতে পারে। সেই কর্মসূচি আশা করি শাজাহান খান সাহেব ঘোষণা করবেন। সেই কর্মসূচি ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করছি। অবশ্যই বাংলার মাটিতে আগুন সন্ত্রাসী খালেদা জিয়ার ফাঁসি কার্যকর হবে। জয় বাংলা।’
সমাবেশে অবরোধ হরতালের বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন শাহজাহান খান। এর মধ্যে সবচেয়ে রয়েছে হলো ৫ এপ্রিল খালেদা জিয়ার ফাঁসির দাবিতে গণপদযাত্রা ও সমাবেশ। মানিক মিয়া এভিনিউতে সমাবেশ করে সেখান থেকে পদযাত্রা নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তনে এসে শপথ নেওয়া হবে। সেই সমাবেশে লাখো মানুষের সমাবেশ ঘটিয়ে গণপদযাত্রাকে সফল করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ ছাড়া আজ রোববার বিকেল ৩টায় ধোলাইপাড়ে শ্রমিক জনসমাবেশ থেকে তাদের এবারের কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা জানান শাজাহান খান। এরপর আগামীকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে সোমবার সকাল ১১টায় প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রতিবাদ, মানববন্ধন, সমাবেশে সহযোগিতা করা হবে বলে জানানো হয়।
অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ১৮ মার্চ সকাল ১০টায় লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলায় শ্রমিক-কর্মচারী-মুক্তিযোদ্ধা-পেশাজীবীদের সাথে মতবিনিময়। একই দিন বিকেলে লক্ষ্মীপুর রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শ্রমিক জনসমাবেশ, ১৯ মার্চ খুলনা সার্কিট হাউসে সকাল ১০টায় খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার শ্রমিক-কর্মচারী-মুক্তিযোদ্ধা-পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়। ওই দিন বিকেলে যশোর, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ জেলার শ্রমিক-কর্মচারী-মুক্তিযোদ্ধা-পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়। ২০ মার্চ কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা জেলার শ্রমিক-কর্মচারী-মুক্তিযোদ্ধা-পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করা হবে কুষ্টিয়া জেলায়। ২৩ মার্চ বিকেলে মিরপুরে শ্রমিক জনসমাবেশ, ২৪ মার্চ বিকেলে গাজীপুরে শ্রমিক সমাবেশ, ২৫ মার্চ বিকেলে নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।