ব্রেকিং নিউজ
Home / অপরাধ জগৎ / ‘নারীলোভী’ পুলিশের এসআই ক্লোজড

‘নারীলোভী’ পুলিশের এসআই ক্লোজড

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের নারীলোভী উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়ারেচকে (৪৫) অবশেষে (ক্লোজড) প্রত্যাহার করা হয়েছে।

কিশোরী (অপ্রাপ্ত বয়স্ক) স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে শাস্তি স্বরূপ কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

রংপুর জেলা সদরের সাতচত্বর স্টেশন রোড এলাকার মো. সেলিম উদ্দিনের ছেলে এসআই ওয়ারেচ বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার এসআই ওয়ারেচের এ ঘটনা চাউর হয়ে যাওয়ায় পরে বেরিয়ে আসছে অজানা আরও নানা এই কুকীর্তির তথ্য। একাধিক নারী ঘটিত ঘটনায় জড়িত এই পুলিশ কর্তা এরআগেও একটি বিয়ে করেছেন। সেই সংসারে স্ত্রী আসমা বেগমের তিন সন্তান রয়েছে।

কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলো ওই সংসারের বড় মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পরে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে কিশোরী হাবিবার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক বিবাহ করেন এসআই ওয়ারেচ। বিষয়টি লুকোচাপা রাখতে হাবিবাকে কাউনিয়া থানা এলাকায় একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখতেন।

বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানা পুলিশ সূত্র জানায়, কিশোরী স্ত্রী হাবিবা আক্তারকে ৩ মাস ধরে একটি ঘরে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন এসআই ওয়ারেচ। বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে ওই কিশোরীকে বরিশাল জেলা মহিলা আইনজীবী সমিতির নেতারা থানা পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করেন।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিনভর বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের দায়িত্বশীল মহল প্রথমে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু আইনজীবী সমিতির নেতাদের কঠোরতায় এতে ব্যর্থ হয়ে সর্বশেষ এসআই ওয়ারেচকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি হেডকোয়াটার) মো. সোয়েব আহম্মেদ বলেন, ‘তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে স্থায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বরিশাল জেলা মহিলা আইনজীবী সমিতির নেতা অ্যাডভোকেট মুনিরা বেগম জানান, মা মাহামুদা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে কাউনিয়া থানাধীন একটি ভবনের নিচতলা থেকে হাবিবা আক্তারকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) জিল্লুর রহমানেরর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় কিশোরীর মুখে এসআই ওয়ারেচের ভয়ানক কুকীর্তির কথা শুনে রীতিমতো অবাক হয়েছেন পুলিশের কর্মকর্তারা।

সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে হাবিবা জানান, বাসার একটি কক্ষে আটকে রেখে তাকে হাত পা বেঁধে মারপিট করতেন এসআই ওয়ারেচ। যে কারণে কিশোরীকে তার মায়ের হেফাজতে দিয়ে সর্বশেষ এসআই ওয়ারেচের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন পুলিশের কর্তারা।

কিশোরী হাবিবার মা মাহফুজা বেগম বলেন, ‘দেড় বছর আগে বন্দর (সাহেবেরহাট) থানাধীন তার গ্রামের বাড়িতে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে তদন্তে যান এসআই ওয়ারেচ। তখন তার মেয়ে বরিশাল নগরীর শে-র-ই-বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী হাবিবাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই তার মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন করতেন এসআই ওয়ারেচ।’

তবে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে এসআই ওয়ারেচ বলেন, ‘শ্বশুর পরিবার সামাজিকভাবে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে বদনাম রটাচ্ছে।’