২০-দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধের শুরুতে প্রতিদিনই সিলেটের রাজপথে ঝটিকা মিছিল বের করত শিবির। মিছিল থেকে গাড়ি ভাঙচুর ও পেট্রলবোমা হামলা চালিয়ে গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ছিল নিত্যদিনের। শিবিরের নাশকতার কৌশলের সঙ্গে পেরে উঠতে পারছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ অবস্থায় শিবিরের ভিতর সোর্স ঢুকিয়ে দিয়ে পুলিশ আটক করে শামসুর রহমান জাবাল নামের এক শিবির নেতাকে। জাবাল শিবিরের সিলেট বিভাগের প্রধান সমন্বয়কারী ও নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারী বলে দাবি করে পুলিশ। জাবালকে রিমান্ডে এনে শিবিরের নাশকতার কৌশল ও পরিকল্পনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া গত সোমবার দক্ষিণ সুরমার একটি সিএনজি স্টেশনে পেট্রলবোমা হামলার সময় হাতেনাতে জনতার হাতে আটক হয় মহানগর শিবির নেতা আবদুল আজিজ। তার কাছ থেকেও নাশকতার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করে পুলিশ। এ দুই নেতা আটকের পর শিবির ফের তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে নাশকতা চালানোর জন্য রাস্তায় নামিয়েছে নিজস্ব গোয়েন্দা বাহিনী।
একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, নগরীর কোথায় নাশকতা চালানো হবে তা আগে থেকেই ঠিক করেন শিবিরের দায়িত্বশীল নেতারা। এরপর ওই এলাকায় অবস্থান নেয় শিবিরের ‘গোয়েন্দা’ সদস্যরা। আশপাশে পুলিশের অবস্থান না থাকার তথ্য পেঁৗছে দেওয়া হয় ‘অপারেশন’ টিমকে। ‘গোয়েন্দা তথ্য’ পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে মোটরসাইকেলে এসে নাশকতা চালিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এ ছাড়া পুলিশের গতিবিধি ও অবস্থান জানতে নগরীতে ঘুরে বেড়ায় শিবিরের ‘খুদে গোয়েন্দারা’। গত বুধবার সিলেট নগরীর সোবহানীঘাটের বেঙ্গল গ্যাসোলিন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ডিউটি পরিবর্তনের ফাঁকে ককটেল হামলা চালায় কয়েকজন যুবক। পুলিশের ধারণা, শিবিরের গোয়েন্দা সদস্যদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানান, পুলিশের কৌশল ও তৎপরতার কারণে শিবিরের নাশকতার মূল পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়েছে। এখন তারা নিজস্ব গোয়েন্দা রাস্তায় নামিয়ে ‘ঝটিকা নাশকতার’ চেষ্টা করছে।