ঢাকা: ‘‘দ্যাশে তো আইন-কানুন আছে। অপরাধ করলে তার শাস্তি হইবে। তাই বইল্লা কি বিচার ছাড়াই পুলিশ একটা মানুষ মাইররা হালাইবে। এহন মুই দুইডা নাতনি ও পোলার বউ নিয়া কই যামু। ওরে আল্লারে, আমার টিপুরে ফিরাইয়া দেন।’’
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ছোট হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই আহাজারি করছিলেন পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দকযুদ্ধে’ নিহত বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ছাত্রদলের যু্গ্ম সম্পাদক টিপু হওলাদারের (৩৫) মা রিজিয়া বেগম।
টিপু হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নিহতের পরিবার।
‘‘‘একটি মিথ্যা গাড়ি পোড়ানো মামলায় এভাবে পুলিশ একজনকে গুলি করে হত্যা করতে পারে? এটা কোন দেশ!’’ বলে ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে সদ্য স্বামী হারা টিপুর স্ত্রী সোমা আক্তার বলেন, ‘‘আমার তিন বছরের মেয়ে হাফসা ও তিন মাস বয়সী আফরোজাকে নিয়ে এখন কোথায় যাব? তাদের আমি কেমন করে মানুষ করব?’’
সোমা আক্তার বলেন, ‘‘আমরা জানতে পারি ১৯ ফেব্রুয়ারি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ঢাকা থেকে টিপুকে আটক করে হাজারীবাগ থানায় নিয়ে গেছে। পরদিন সকালে তাকে আগৈলঝাড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ খবর শুনে শাশুড়িসহ আগৈলঝাড়া থানায় গেলে পুলিশ বলে টিপু এখানে নেই। তারপর থানার দারোগা আমাদের থানা থেকে বের করে দেয়।’’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘২০ তারিখ শুক্রবার রাত ২টার দিকে থানার পাশে ৮/১০টা গুলির শব্দ পাই। পরদিন সকাল বেলা শুনতে পাই টিপু ও জাসাসের সাংগঠনিক সম্পাদক কবির মোল্লা (৩০) বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে।’’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন টিপু হাওলাদারের শ্বাশুড়ি নুরন্নাহার বেগম ও তার সন্তানরা।
উল্লেখ্য, ২০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার মধ্যরাতে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাইপাস সড়কের কুয়াতিরপাড়ে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ছাত্রদলের যু্গ্ম সম্পাদক টিপু হওলাদার (৩৫) ও জাসাসের সাংগঠনিক সম্পাদক কবির মোল্লা (৩০) নিহত হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি পেট্রোলবোমা ও একাধিক দেশি অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।