ইব্রাহিম খলিল : বৃটিশ-বাংলাদেশী অধ্যুষিত ইস্ট লন্ডনে এখন জনপ্রিয় বাঙালী রসনা সমৃদ্ধ খাবার। চিকেন এন্ড চিপস তথা ফাস্ট ফুড ছেড়ে বাংলাদেশীরা নিচেছন আলু ভর্তা, বেগুন বর্তা, চাটনী এবং খিচুরীর স্বাদ। তুলনামূলক কম মূল্য এবং স্বাস্থ্যকর এই খাবারের প্রতি ঝুঁকছেন ইস্ট লন্ডনে আগত সকল শ্রেণীর প্রবাসী বাংলাদেশীরা। সম্প্রতিকালে মাত্র ২ থেকে ৩ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশী খাবারের নতুন এই ট্রেডিশন শুরু হয়েছে ইস্ট লন্ডনের বিশেষ করে হোয়াইটচ্যাপল এলাকায়।
খাবারে বাঙালীয়ানা। বাঙালীরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকেন না কেন, এই বাঙালীয়ানা ধরে রাখা চিরাচরিত অভ্যাস। ইস্ট লন্ডনেও এর ব্যতিক্রম নয়। বৃটেনের যে কোন প্রান্তের চেয়ে ইস্ট লন্ডনেই সবচেয়ে ব্যস্ত সময় কাটান প্রবাসী বাংলাদেশীরা। হোক তা অফিসিয়াল কিংবা ব্যবসায়িক ব্যস্ততা। ব্যস্ততার ফাঁকে দুপুরের খাবার সারতে হয় এসকল ব্যস্ত মানুষদের। আর এই তালিকা ষোল আনাই বাঙালীয়ানায় ভরপুর।
গত ২/৩ বছরের ব্যবধানে শুধুমাত্র হোয়াইটচ্যাপল রোডেই গড়ে উঠেছে বাংলাদেশী খাবারের বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট। এসব রেস্টুরেন্টে এখন পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রকারের ভর্তা, চাটনী, নানা ধররের শবজি, তরি তরকারী এবং মাছ থেকে নিয়ে সকল ধরনের বাংলাদেশী খাবার। তুলনামূলক কম মূল্যে এবং খাবারে বাংলাদেশী ঐতিহ্য থাকায় দিনে দিনে বাড়ছে এসব রেস্টুরেন্টে ভোজনবিলাসী মানুষের আগমন।
হোয়াইটচ্যাপল এলাকায় দূর দুরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীদের টার্গেট করেই এই ব্যবসার প্রসার ঘটেছে। পূর্বে ইস্ট লন্ডনে কর্মরত ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীরা ঘর থেকে তাদের দূপুরের খাবার টিফিনে করে নিয়ে আসতেন অথবা বিভিন্ন ফাস্ট ফুডের শপের চিকেন এন্ড চিপস, ডোনার কাবাব আর নানা ধরনের ফ্যাট সমৃদ্ধ ফাস্ট ফুডের উপর ছিলো তাদের ভরসা। এসব খাবার যেমনি ছড়া ধামী তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁিককর। কিন্তু এর বিপরীতে অনেকটাই স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাধু বাংলাদেশী খাবার।
হোয়াইটচ্যাপলের এসব রেস্টুরেন্টে গিয়ে কথা হয় অনেক গ্রাহকদের সাথে। তাদের অনেকেই বলেছেন, বাংলাদেশী এসব খাবার অনেক সুস্বাধু এবং স্বাস্থ্যকর। পাশাপাশী দেশীয় আমেজ ও ঐতিহ্য থাকায় এই খাবার তারা গ্রহন করছেন। পূর্বে দূপুরের খাবার নিয়ে অনেক চিন্তিত থাকতেন। বাধ্য হয়েই খেতেন বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট ফুড।
তবে খাবারে হাইজিন সক্রান্ত বিষয় নিয়ে অনেকের কৌতুহল থাকলেও হোয়াইটচ্যাপল রোডের মিড পয়েন্ট রেস্টুরেন্ট মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানালেন, স্থানীয় ফুড হাইজিন অথরিটি তাদের ফাইভ স্টার মার্ক দিয়েছে। নিয়মিত অফিসারগন রেস্টুরেন্ট পরিদর্শন করছেন। গত ২ বছরের কোন ধরনের অভিযোগ তিনি পাননি। আর খাবারের হাইজিন যথাযথভাবে রক্ষা করা হয় বলেই বিভিন্ন অফিস থেকেও বাংলাদেশী খাবারের প্রচুর অর্ডার পান বলে জানান অপর রেস্টুরেন্ট ক্যাফেটেরিয়ার মালিক মোহাম্মদ রাকিব।
ইস্ট লন্ডনে গত কয়েকযুগের ব্যবধানে বাঙালীরা নানা ধরনের ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছেন। এবার নতুন করে উম্মুক্ত হলো বাংলাদেশী খাবারের দ্বার।