১৬ নভেম্বর, ২০১৪: একটি পর্যবেক্ষণ সংস্থার মতে, আইএসের উত্থানের পর লন্ডনে মুসলিমবিরোধী অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। টেল মামা নামে একটি দাতব্য সংস্থার কর্মকর্তা ফিয়াজ মিঘাল আনাদলু সংবাদ সংস্থাকে জানান, আইএস কর্তৃক শিরোñেদের ভিডিও প্রকাশের পর প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে মুসলমানরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। ধর্মীয়, গোষ্ঠীগত বা জাতিগত অপরাধ বিষয়ে যুক্তরাজ্যে মুসলিমবিরোধী কাজের তথ্য সংগ্রহ করে টেল মামা নামে এ সংস্থা।
মিঘাল বলেন, মুসলিমদের বিরুদ্ধে মৌখিক নির্যাতনে বুঝা যায় যে, আইএস সম্পর্কিত ধারণা যুক্তরাজ্যে মুসলিমবিরোধী ঘৃণা উসকে দিচ্ছে। আমাদের কাছে অভিযোগ আছে, মুসলিম মহিলারা বাজার করতে যাওয়ার সময় তাদের তিরস্কার করে বলা হয়, আমরা কেন তোমাদের শিরোñেদ করি না? আরেকটি ঘটনায় দুর্বৃত্তরা এক মুসলিম মহিলাকে উদ্দেশ করে বলে, তোমার মাথাটি মেঝের ওপর বেশি ভালো লাগবে।
মেট্রোপলিটন পুলিশকে অনুরোধ করে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে সার্বিকভাবে এ অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে।
মিঘাল বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনে ব্রিটিশ সৈন্য লি রিগবি নিহতের পর মুসলিমবিরোধী অপরাধ বাড়লেও তা কমে এসেছে বলে পুলিশ জানালেও টেল মামার গবেষণায় দেখা গেছে, সার্বিকভাবে অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। টেল মামা জানায়, মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, লি নিহত হওয়ার আগে ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত গড়ে প্রতি মাসে ২৮টি মুসলিমবিরোধী অপরাধ ঘটেছে। কিন্তু তার পরবর্তী বছর ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ২০১৪ সালের মার্চে দেখা যায়, এ অপরাধ ৬৬ শতাংশ বেড়েছে।
টেল মামা জানায়, বার্মিংহামের তথাকথিত ট্রজান হর্স কেলেঙ্কারি, গাজা-ইসরাইল সঙ্ঘাত এবং আইএসের কার্যক্রমে মুসলিমবিরোধী আক্রমণ বেড়েছে।
স্কটল্যান্ডের সাবেক সমাজকর্মবিষয়ক প্রধান পরিদর্শক অধ্যাপক অ্যালেক্সিস জাইর রিপোর্ট মতে, রটারহামে শিশু নির্যাতনের রিপোর্টের পর ২০১৪ সালে মুসলিমবিরোধী পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গেছে। অতি ডানপন্থীরা ঘটনাটিকে মুসলিম ইস্যুতে পরিণত করে। মিঘাল আরো বলেন, এটা স্পষ্ট যে ২০১৪ সালে মুসলিমবিরোধী অপরাধ কমেনি। বরং এটা বেড়েছে।
যুক্তরাজ্যের টিসাইড বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুসন্ধানে প্রকাশ, মুসলিম মহিলারা অব্যাহতভাবে মুসলিমবিরোধী অপরাধের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন।