১৭ অক্টোবর ২০১৪:বাংলাদেশে পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাবের গুলিতে পা হারানো ছাত্র লিমন হোসেন সর্বশেষ অভিযোগ থেকেও অব্যাহতি পেয়েছেন।
সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় পর সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ সম্পর্কিত মামলা থেকে ঝালকাঠির একটি আদালত বৃহস্পতিবার তাকে অব্যাহতি দেয়। এরআগে অস্ত্র আইনে প্রথম মামলায় অব্যাহতি পাওয়ায় লিমন হোসেন এখন সব অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন।
তবে লিমন হোসেন বলেছেন, ২০১১ সালে র্যাবের গুলিতে তিনি যে পা হারিয়েছেন, সেই ঘটনার বিচার তিনি চান। র্যাব তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও একটি মামলা করেছিল। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দু’টি মামলাই প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্তও হয়েছিল এক বছরের বেশি সময় আগে।
তখন অস্ত্র আইনের মামলাটি প্রত্যাহার করা হলেও অন্যটি ঝুলে ছিল সংশ্লিষ্ট আদালতে বিচারকের অভাবে। এখন এসে সরকারী কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগেও ঝালকাঠির মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালত মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি গ্রহণ করে লিমন হোসেনকে অভিযোগ থেকে অব্যহতি দেয়।
তিনি বলছিলেন, “রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে আমি পঙ্গু হলেও রাষ্ট্র আমার কোন দায়িত্ব নেয়নি।এখন সাড়ে তিন বছর পর মামলা প্রত্যাহার হওয়ায় আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি। কিন্তু আমি খুশি না। কারণ আমাকে পঙ্গু করার জন্য আমার মা র্যাবের ছয় জন সদস্যের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছে, সেই মামলায় যখন অভিযুক্তদের বিচার করা হবে। তখন আমি ন্যায় বিচার পাব।”
২০১১ সালের মার্চ মাসে ঝালকাঠির সাতুরিয়া গ্রামে নিজের বাড়ির কাছে র্যাবের গুলিতে ছাত্র লিমন হোসেন তাঁর একটি পা হারিয়েছিলেন। তাঁর মা সেই ঘটনার ব্যপারে র্যাবের ছয়জন সদস্যকে অভিযু্ক্ত করে ঝালকাঠির আদালতে মামলা করেছিলেন। মামলার তদন্তে পুলিশ র্যাবের সদস্যদের অভিযোগ থেকে অব্যহতি দিয়ে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল। কিন্তু লিমন হোসেনের মা সেটা গ্রহণ না করে আদালতে নারাজী আবেদন করেছেন। যে আবেদনে এখনো আদালতে নিস্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে ।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রের নূর খান লিটন বলেছেন, র্যাবের গুলিতে লিমন হোসেনের পা হারানোর ঘটনায় বিচারের দাবিকে তারা এখন সামনে আনবেন। তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন, পা হারানোর ঘটনা এবং র্যাবের মামলার কারণে সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে লিমন হোসেনকে যে হয়রানি পোহাতে হয়েছে, সে জন্য ক্ষতিপূরণের দাবিকেও তারা এখন তুলে ধরবেন।
এদিকে, র্যাবের কর্মকর্তা কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে আইনগতভাবে লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হয়েছে বলে র্যাব মনে করে। এই বক্তব্যের বাইরে র্যাবের কর্মকর্তারা আর কিছু বলতে রাজি হননি।
লিমন হোসেন এখন ঢাকার অদূরে সাভারে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে স্নাতকে পড়ছেন।
সৌজন্যে: বিবিসি
London Bangla A Force for the community…

























