১৭ অক্টোবর ২০১৪: দু’দিনের সফরে ঢাকা এসে পৌঁছেছেন মিসাইল ম্যান নামে খ্যাত বিজ্ঞানী এবং ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এপিজে আবদুল কালাম। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিসি আই)-এর ১১০ বছরপূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভাষণ দেবেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) আয়োজিত ‘এপিজে আবদুল কালামের সঙ্গে যুব সংলাপ’ অনুষ্ঠানে তিনি বাংলাদেশ সম্পর্কে বলেছেন, এ দেশের সব জায়গাতেই পানির প্রাচুর্য্য রয়েছে। যেখানে গিয়েছি সেখানেই দেখেছি উর্বর ভূমি ও মেধাবী তরুণদের। এ দেশের মোট নাগরিকের অর্ধেকের বেশিই তরুণ। এ তরুণদের মধ্যে রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে যথার্থ পরিকল্পনা করতে হবে। থাকতে হবে বড় স্বপ্ন। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মনোভাব ও উদার মানসিকতা নিয়ে জীবনে পথ চলতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে সাফল্য দেখিয়েছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নেও সাফল্য এসেছে। তবে এখনও এ দুই খাতে উন্নয়ন করাই এ দেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশ একই ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক। দুই দেশের ভৌগলিক অবস্থার মধ্যে মাটির মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে। দুই দেশের জনগণই দেশপ্রেমের দারুণ নজির স্থাপন করেছে। সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছে, জীবন দিয়েছে দেশের স্বাধীনতার জন্য। দুই দেশই বিশ্বের বুকে উদার ও শক্তিমান রাষ্ট্র হিসেবে ভূমিকা রাখতে চায়। আমাদের উন্নয়ন লক্ষ্যের সূচকগুলোও প্রায় একই। উভয় দেশ এক সঙ্গে কাজ করলে, অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথ সহজ ও গতিশীল হবে।
এপিজে আবদুল কালাম বলেন, বিজ্ঞানের চর্চা দারুন সুখ ও উত্তেজনা তৈরি করে। সৃষ্টির সাফল্যের অনুভূতি বর্ণনাতীত। জগতে যত বড় উদ্ভাবন-সৃষ্টি দেখা যায়, তার পেছনে তত বড় কল্পনা ও স্বপ্ন রয়েছে। নিজের চারপাশের সৃষ্টির পেছনের প্রশ্ন খুঁজতে হবে। প্রশ্নের উত্তরের জন্য পরিশ্রম করতে হবে। ‘ইগনাইটেড মাইন্ড’ বইয়ের লেখক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, জীবনের লক্ষ্য অনেক বড় হতে হবে। স্বপ্ন হতে হবে বিশাল। ছোট লক্ষ্য থাকা অপরাধ। সাফল্য ও ব্যর্থতার ব্যবস্থাপনা করতে শিখতে হবে। এর চর্চা করতে হবে। বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের যেকোনো প্রক্রিয়ার পরিকল্পনা, সমন্বয় এবং ব্যবস্থাপনার ধারণা থাকতে হয়। জীবনের ক্ষেত্রেও তা-ই। মানব কল্যাণের জন্য, জনগণের হাসির জন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। চূড়ান্ত সাফল্য আসে ব্যর্থতার পথ ধরেই। তাই ব্যর্থতার সময়ে এবং বিষয়ে ব্যবস্থাপনা করতে পারাটা জরুরি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমসিসিআই’র সভাপতি রোকেয়া আফজাল রহমান। বক্তৃতাপর্ব সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এমসিসিআই’র সহ সভাপতি আনিস এ খান।