৩ অক্টোবর ২০১৪: জার্মানরা ক্রিকেট খুব একটা খেলে না। ফুটবলে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ক্রিকেট না খেললেও ঠিকই এ খেলায় বাড়িয়ে দিল সহযোগিতার হাত। এশিয়ার দেশ আফগানিস্তানে একটা ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণে জার্মানি ৭ লাখ ইউরো সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছে। স্টেডিয়ামটি নির্মিত হবে পূর্বাঞ্চলীয় খোস্ত প্রদেশে।
কাবুলভিত্তিক জার্মান সংস্থাই এ স্টেডিয়াম নির্মাণে অর্থসহায়তা দিচ্ছে। খোস্তে এরই মধ্যে আধুনিক ক্রীড়া স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। ২০১১ সালে এ ক্রীড়া স্থাপনা নির্মাণে অর্থসহায়তা দেয় আফগানিস্তান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। এবার ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মিত হলে তা দেশটির ক্রিকেটারদের জন্য বিরাট টনিক হিসেবেই কাজ করবে। এ বছর এশিয়া কাপ ও টি২০ বিশ্বকাপে দুরন্ত পারফর্ম করায় আফগানিস্তানে ক্রিকেট এখন ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী খোস্ত অঞ্চলটি মূলত পার্বত্য। এটা উত্তর ওয়াজিরিস্তানের কাছাকাছি। এখানে যে স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে তার ধারণক্ষমতা হবে ৬ হাজার, নির্মিত হবে ২৫ একর জায়গার ওপর। এটা হতে যাচ্ছে আফগানিস্তানের চতুর্থ বৃহত্তম ক্রিকেট স্থাপনা। এর আগে চলতি বছরের শুরুতে কান্দাহারে স্টেডিয়াম নির্মাণে ভারত সরকার ১০ লাখ ডলার অর্থ সাহায্যের ঘোষণা দেয়। ভারতীয় সরকারের ‘স্মল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট স্মিম’-এর মাধ্যমে এ অর্থ সাহায্য দেয়া হবে।
ক্রিকেটের উদীয়মান শক্তি আফগানিস্তান ইনচন এশিয়ান গেমস ক্রিকেটের ফাইনালে উঠেছে। স্বর্ণের ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা। হারলেও রৌপ্যপদক নিশ্চিত। ইনচনে অবস্থানরত আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহজাদা মাসুদ গত পরশু তাদের ক্রীড়া উন্নয়নে বিদেশী সাহায্য নিয়ে বলেন, ‘সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় আমরা ভারত ও জার্মান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এখন আমরা চাই, ভারতের মতো দলগুলো যেন আমাদের মাটিতে এসে খেলে। শচীন টেন্ডুলকার যদি আমাদের মাঠে এসে খেলতেন, তবে তা বিরাট আনন্দের ব্যাপারই হতো। আশাকরি, মহেন্দ্র সিং ধোনি একদিন এটা করবেন।’
আগামী বছর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলবে আফগানিস্তান। গত বছর তারা এ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে। এই বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য আইসিসির কাছ থেকে ১০ লাখ ডলার অনুদান পেয়েছে আফগানরা। ২০১৩ সালের এপ্রিলে ৪ লাখ ২২ হাজার ডলার তারা পেয়েছে ভালো পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে। এছাড়া চলতি বছর তারা আইসিসির শীর্ষ সহযোগী দেশ হিসেবে অন্যদের সঙ্গে ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার অর্থ সাহায্য পেয়েছে। এটা আইসিসির ‘ডেভেলপমেন্ট ফান্ডিং পলিসি’র আওতায় দেয়া হয়েছে।
কেবল অর্থ সাহায্য পেয়েই খুশি নয় আফগানিস্তান, তারা এখন নিজ দেশে আন্তর্জাতিক ম্যাচও চায়। সেই দাবি জানিয়ে মাসুদ বলেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের অনুরোধ করছি তারা যেন আমাদের দেশে আসেন এবং এখানে ক্রিকেট খেলেন। এটা আমাদের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে সমর্থন চাই। নিরাপত্তাজনিত অনিশ্চয়তার কারণে গত ৩০ বছর আমাদের অনেক সমস্যা পোহাতে হয়েছে, কিন্তু এখন সেসব আমাদের মন ও হূদয় থেকে মুছে ফেলতে হবে।’
এরই মধ্যে দুটি টি২০ বিশ্বকাপেও খেলেছে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। এতে খেলাটি আফগানদের হূদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ৩২টি প্রদেশে ক্রিকেট খেলা হয়। এখানকার লিগ ম্যাচেও ২০-৩০ হাজার দর্শক জমায়েত হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের অবকাঠামোর অভাব। এ কারণেই জার্মানি ও ভারত স্টেডিয়াম নির্মাণে এগিয়ে এল। ক্রিকইনফো
সাবাস মেসি