৩ অক্টোবর ২০১৪: রাজপথ ঝাড়ু দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। না, বিষয়টি কল্পনার নয়। বাস্তবে ঝাড়ু হাতে রাজপথ ঝাড়ু দিতে নেমেছিলেন তিনি। ‘স্বচ্ছ ভারত’ কর্মসূচির অধীনে ভারতকে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন একটি দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছেন মোদি। গতকাল এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময়ে তিনি রাজপথে দাঁড়িয়ে ২৫ মিনিটের বক্তব্য রাখেন। বলেন, তার এ প্রচারণার সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই। এ কর্মসূচিতে এগিয়ে আসতে পৃষ্ঠা ১৭ কলাম ৪
হবে ১২৫ কোটি ভারতীয়কে। ভারত পরিচ্ছন্ন রাখতে বিগত দিনে যে সব সরকার কাজ করেছে তিনি তাদের প্রশংসা করেন। বার্তা সংস্থা পিটিআই এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, এ প্রচারণায় নরেন্দ্র মোদি ৯ জন বিশিষ্ট ভারতীয়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তারা প্রত্যেকে যেন ৯ জন করে কর্মীকে নিয়ে এ অভিযানে নেমে পড়েন। ওই ৯ ব্যক্তি হলেন গোয়ার গভর্নর মৃদুলা সিনহা, ভারতরত্ন শচীন টেন্ডুলকর, যোগগুরু বাবা রামদেব, অভিনেতা কমল হাসান, কংগ্রেস নেতা শশী ঠারুর, অভিনেত্রী প্রিয়াংকা চোপড়া, সালমান খান, ব্যবসায়ী অনিল আম্বানি এবং টিভি সিরিয়াল ‘তারক মেহতা কা উলটা চশমা’র। এ প্রসঙ্গে মোদি বলেন, গত ৫০ বছরে অনেক ছবি নির্মিত হয়েছে। তার অনেকগুলোতে মানুষকে পরিচ্ছন্নতা শেখাতে শিক্ষা দেয়া হয়েছে। তারকাদের এর চেয়েও বেশি কিছু করতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে ৫ বছর মেয়াদি এ কর্মসূচিতে ৬২০০৯ কোটি রুপি খরচ হবে। এতে ১৪৬২৩ কোটি রুপি দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। এ নিয়ে সমালোচনা আছে। বলা হচ্ছে, প্রতিটি বিষয়েই কৃতিত্ব নিতে চাইছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। এমন সমালোচনার জবাবে তিনি বলেছেন, আমি এ নিয়ে রাজনীতি করছি না। এ উদ্যোগ রাজনীতির বাইরে। আমার দেশপ্রেম থেকে এ কাজে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। ভারতের সব সরকারই দেশের জন্য এক্ষেত্রে কিছু না কিছু কাজ করেছে। বেশ কিছু রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ লক্ষ্যে কাজ করেছে।
যারা এ খাতে কাজ করেছেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাই। তিনি বলেন, আমরা যে প্রচারণা শুরু করেছি এটাকে একটি ছবি তোলার সুযোগ হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। মোদি বলেন, এ কর্মসূচি শুরুর দু’এক দিন পরেই এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হবে। এ কথা তিনি জানেন। এ জন্য তিনি প্রস্তুত। কারণ, দেশবাসী তার প্রচারণা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে না- এমন আস্থা রয়েছে তার। গতকাল শুরু হওয়া এ কর্মসূটি ৫ বছর ধরে চলবে ৪০৪১টি শহরে। গত মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয় ‘নির্মল ভারত অভিযান’ পরিচালনার। এ কর্মসূচি পরিচালিত হবে গ্রাম এলাকায়। স্বচ্ছ ভারত মিশনের পাশাপাশি চলবে এ অভিযান। নরেন্দ্র মোদি সরকারের এমন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। তারা বলছে, মোদি ক্ষমতায় আসার পর সব কিছু নিজের করা- এমন কৃতিত্ব নিতে চাইছেন। এর জবাবে মোদি বলেন, আমি এমন কোন দাবি করিনি যে, যে সরকার সবেমাত্র ক্ষমতায় এসেছে তারা সব কিছু করেছে। মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকীতে নরেন্দ্র মোদি জাতির কাছে জাতির জনকের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতির জনক পরিচ্ছন্ন ভারত দেখার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার সেই স্বপ্ন অপূর্ণ রয়ে গেছে। ২০১৯ সাল তার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী। ওই সময়ের মধ্যে আমরা সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে চাই। কেন্দ্রীয় পানীয় জল ও পয়ঃনিষ্কাশন বিষয়ক মন্ত্রী নীতিন গড়করি বলেছেন, এ প্রচারণায় অংশ নেবে গ্রাম পঞ্চায়েতও।