শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ : ব্রিটিশ ছায়া শিক্ষামন্ত্রী রুশানারা আলি পদত্যাগ করেছেন। ইরাক ইস্যুতে ব্রিটিশ সম্পৃক্ততা বিষয়ক প্রস্তাবে ভোট না দিতেই তিনি এই পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। পদত্যাগের প্রতিউত্তরে লেবার পার্টির নেতা এড রুশানারা আলির প্রশংসা করে পদত্যাগকে গ্রহণ করে নেন।
লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত বেথনেল গ্রিন এবং বো-এর এই সংসদ সদস্য ঘোষণা করেছেন, তিনি হাউজ অব কমন্সের ভোটে অংশ নিতে পারবেন না বলেই এই পদত্যাগ করছেন। কারণ তিনি মনে করেন, ইরাকে বিমান হামলা সাধারণ মানুষকে কোনো ক্ষতি না করে সন্ত্রাস দমনে কোনো কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবে।
এদিকে ব্রিটিশ এমপিদের সিংহভাগই ইরাকে আইএসআইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালানর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ৫২৪ জন ভোটারের মাঝে ৪৮১ জন এমপি-ই বিমান হামলার পক্ষে নিজেদের রায় জানিয়েছেন। অপরদিকে বিমান হামলার বিপক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র ৪৩টি।
রুশানারা আলি বলেছেন, তার বিবেক এই ভোটে অংশ নিতে সমর্থন দেয়নি এবং তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এর থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন।
নিজের পদত্যাগ পত্রে তিনি লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ডকে বলেছেন, আইএসআইএস-এর বর্বরতার কোনো সীমা নেই এবং তাদের প্রতি আমি আমার দেশের জনসাধারণের মনোভাব সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করি। কিন্তু আমি নিশ্চিত নই, ম্বল্পসময়ের এই সেনা অভিযান সাধারণের কোনো ক্ষতি না করে সেখানে সন্ত্রাস দমনে পরিপূর্ণরূপে কাজ করবে। তিনি তার পদত্যাগ পত্রে আরো লেখেন, এমনকি দীর্ঘসময়ের কোনো পদক্ষেপের বিষয়ে যুক্তরাজ্য ভাবছে বলেও আমার মনে হয় না। ভালো উদ্দেশ্য থাকা সত্ত্বেও আমার শেষে দশকে অনেক ভুল করেছি। এবং যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশগুলোর এই ভুলের খেসারত এখনো দিতে হচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাটার মানুষগুলোর।
তিনি এর সাথে যোগ করেন, এছাড়া মুসলিম ও অমুসলিম শিবিরে একটা বিশ্বাস ইতোমধ্যে বিস্তার লাভ করেছে, সেনা অভিযান শুধুমাত্র রক্তপাতই ঘটাতে পারবে এবং ইরাকি জনগণের কষ্টই শুধু বাড়াতে পারবে। এই পদত্যাগের প্রতিউত্তরে মিলিব্যান্ড রুশানারা আলির মেধা ও মননের প্রশংসা করে বলেন, আমি আপনার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাচ্ছি এবং আপনার পদত্যাগকে গ্রহণ করে নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে বেথলেন গ্রিন এবং বো এলাকা থেকে রুশানারা আলি লেবার পার্টির পক্ষে নির্বাচনে লড়ে বিজয়ী হন।
প্রসঙ্গত, রুশানারা আলি ১৪ মার্চ ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেন। পরে সাতবছর বয়সে পুরো পরিবারের সাথে তিনিও যুক্তরাজ্য প্রবাসী হন।