ট্যাওয়ার হ্যামলেটস এলাকা চরমপন্থী উৎপাদনের উচ্চ ফলনশীল এলাকায় পরিণত হয়েছে মর্মে ডানপন্থী সাংবাদিকরা যে সব তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন তা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে টাওয়ার হ্যামলেটসের লেবার দলীয় মেয়র প্রার্থী জন বিগসের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।
বিবিসি সাংবাদিক জন ওয়্যার ও ডেইলি টেলিগ্রাফের সাংবাদিক এন্ড্রু গিলিগ্যানের সাম্প্রতিক প্রচারণায় টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র লুৎফুর রহমানের সাথে ইস্ট এন্ডের মুসলিম কমিউনিটির সুসম্পর্কের উপর অতি মাত্রায় আলোকপাত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা ব্রিটেনের জনগণের কাছে এই বার্তাটিই পৌঁছে দিতে চাইছে যে, মেয়র লুৎফুর রহমান সেই সব গ্র“পকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন যাদের সাথে চরমপন্থীদের সম্ভাব্য যোগসূত্র রয়েছে কিংবা ওই সব সংগঠণ চরমপন্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। সাম্প্রতিক এই সব মিডিয়া কাভারেজের সাথে ২০১০ সালে মেয়র নির্বাচনের সময়কার মানসিক বিকারগ্রস্ত সাংবাদিকতার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তখন ডানপন্থী সাংবাদিকরা একটি কথাই বলার চেষ্টা করেছিল যে, লুৎফুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হলে টাওয়ার হ্যামলেটস ‘ইসলামিক রিপাবলিক’ এ পরিণত হবে।
জন ওয়্যার ও এন্ড্রু গিলিগ্যান উভয়ে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে বলেছেন যে, মেয়র লুৎফুর রহমান বিশেষভাবে বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য কাজ করছেন। একই কথার প্রতিধ্বনি হয়েছে লেবার দলের মেয়র প্রার্থী জন বিগসের কণ্ঠে। বাংলাদেশীদের জন্য বিশেষভাবে কাজ করা সম্পর্কিত অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে মেয়র লুৎফুর রহমান বলেছেন, তিনি মেয়র থাকা অবস্থায় সর্বমোট ২৭.৬ মিলিয়ন গ্রান্টের মধ্য থেকে মাত্র ৮ শতাংশ গ্রান্ট গেছে সেই সব সংগঠণে যে সব সংগঠণের ডাইরেক্টার কিংবা চেয়ার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত।
মেয়র লুৎফুর রহমান বলেছেন:
‘‘আমি বার বার সব ধরণের চরমপন্থার নিন্দা করে আসছি এবং নিন্দা করেই যাব। গণমাধ্যমের একটি নির্দিষ্ট অংশের পক্ষ থেকে আমার বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগের প্রকৃত পক্ষে কোনো ভিত্তি নেই। ওই সব অভিযোগের পক্ষে আজ পর্যন্ত কোনো ধরণের তথ্য প্রমাণ দেওয়া হয়নি। এই সব অভিযোগ হচ্ছে অর্থহীনভাবে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা যা কেবল ইস্ট এন্ডের মুসলিম কমিউনিটির উপর কালিমা লেপন করছে। এই সব কাজ যারা করছে তাদের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে আমি জন জন বিগসের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। একই সাথে আমি জন বিগসের প্রতি তার আক্রমণাত্মক বক্তব্য প্রত্যাহারেরও আহবানা জানাচ্ছি যেখানে তিনি বলেছিলেন, আমি কেবল একটি কমিউনিটির জন্য কাজ করছি।’’
মেয়র রহমান কেবল বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য কাজ করছেন মর্মে জন বিগস যে মন্তব্য করেছেন তার প্রতিকার চেয়ে ইকুয়েলিটিজ এন্ড হিউম্যান রাইটস কমিশনে অভিযোগ দাখিল করেছেন কাউন্সিলার আলিবর চৌধুরি। আলিবর চৌধুরি তার অভিযোগে বলেছেন, জন বিগসের মন্তব্যে তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। কেননা মন্তব্যটি ‘হেইট ক্রাইম’ এর পর্যায়ভূক্ত; তাই বিষয়টি পুলিসের তদন্ত করে দেখা উচিত।
কাউন্সিলার আলিবর চৌধুরি বলেন:
‘‘বিভক্তি সৃষ্টিকারী মন্তব্যের জন্য জন বিগসের ক্ষমা চাওয়া দরকার। বাইরে থেকে এসে যে সকল সাংবাদিক ও পন্ডিতরা আমাদের কমিউনিটির চেতনা ও সৌহার্দ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে, তাদের থেকে দূরে থাকও প্রয়োজন জন বিগসের।’’
মিথ্যা অভিয়োগ কোন ভাবে কাম্ম নয় । আমরা আশা করি তিনি তার ভুল বঝতে পারবে।