শাহাবাগের গণজাগরণ মঞ্চের তরুণদের আন্দোলনের কারণেই সরকার আইন সংশোধন করে একজন যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকর করেছে। সারা পৃথিবীতে এ উদাহরণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় লেখক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল।
বুধবার বিকেলে গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে শাহাবাগে ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও গণজাগরণ মঞ্চের ৬ দফা- আমরা কোথায়?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
যুদ্ধাপরাধীদের একজন একজন করে বিচার করে দেশকে গ্লানিমুক্ত করার জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে তিনি তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তোমরা একা নও, তোমাদের সাথে আছে এদেশের মানুষ।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শুধু অস্ত্র দিয়ে নয় মনোবল ও ভালোবাসা দিয়ে অর্জন করতে হয়। যে ভালোবাসা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা আমাদেরকে বাংলাদেশ উপহার দিয়েছিলেন।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ গণজাগরন মঞ্চের তরুণদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত হয়েছে। আমরা ভেতরে আইনি লড়াই করবো বাইরে রাজপথের আন্দোলন যেন থেমে না যায়।’
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ড. ইমরান এইচ সরকার ২১ ফেব্রয়ারিতে ঘোষিত গণজাগরণ মঞ্চের ছয়দফা দাবি পুনরায় উল্লেখ করে বলেন, ‘এ দাবিগুলো পূরণ হলে সাতক্ষীরার মত অনেক প্রাণ অকালে ঝরে যেত না।’
তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘আজ যখন যুদ্ধাপরাধীদের মদদদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার আর্থিক সহায়তা নেয় তখন মনে হয় সাধারণ মানুষের কোনো সংগঠন নেই।’
তিনি বলেন, ‘জামায়াতের বিচার করতে হবে মুক্তিযুদ্ধকালীন সাংগঠনিক ভূমিকার জন্যই।’
বক্তারা বলেন, ‘আগের মতোই যুদ্ধাপরাধীদের সাথে আঁতাত ও আপোষের রাজনীতি অব্যাহত আছে। এজন্য সরকার ইসলামী ব্যাংকের টাকায় জাতীয় সংগীত গাওয়ার ব্যবস্থা করে।’
তারা আরো বলেন, ‘জামায়াতে ইসলাম ও তার অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা মানে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরা।’
আলোচনায় আরো অংশ নেন মানবাধিকার সংগঠক খুশি কবির, ড. ইয়াসমিন হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাবেরী গায়েন, বগ্লার আরিফ, বিতার্কিক ফাহিম তানভীর আহমেদ, ব্লগার পারভেজ আলম প্রমুখ।
আলোচনা শেষে গণজাগরণের কর্মীরা পতাকা মিছিল নিয়ে শিখা চিরন্তনে যায়। সেখানে ফুল দিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করে। সেখান থেকে পতাকা মিছিলটি আবার শাহাবাগে ফিরে আসে।