শিগগিরই বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। কয়েকদিনের মধ্যে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে নিজের ভুল স্বীকার করার মধ্য দিয়ে আবার বিএনপিতেই ফিরছেন তিনি। বিএনপির গুলশান কার্যালয় সূত্রে এ কথা জানা গেছে।
সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। কয়েকদিনের মধ্যে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে খালেদা-হুদা সাক্ষাৎ পর্ব অনুষ্ঠিত হতে পারে।
জানা গেছে, গত ১৯ তারিখের প্রথম দফা উপজেলা নির্বাচনে নাজমুল হুদার নির্বাচনী এলাকায় তার ছোট ভাই কামরুল হুদা দোহার উপজেলায় স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। উপজেলা নির্বাচনে কামরুল হুদা দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে ৩৮ হাজার ৭৫৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রাথী ইঞ্জিনিয়ার মেহবুব আনারস প্রতীকে পেয়েছিলেন ২৬ হাজার ৫৮৫ ভোট।
কামরুল হুদা দোহার উপজেলায় নির্বাচিত হওয়ায় নাজমুল হুদার প্রতি ঝুকেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। অতীতে মনোমালিন্য ভুলে জাতীয় নির্বাচনে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকেই প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাচ্ছেন তারা। এ দাবিও জানিয়ে নাজমুল হুদাকে বিএনপির সঙ্গে ‘ঘরের বিবাদ’ মিটিয়ে ফেলার আবদার জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতি থেকে দূরে থাকা নাজমুল হুদাও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি দলে ফেরার বিষয়ে নাজমুল হুদা তার নিজ বাসভবন ধানমণ্ডিতে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন বলে সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাজমুল হুদা বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমি বিএনপিতে ছিলাম, বিএনপিতে আছি, বিএনপিতেই থাকবো। আমি বিএনপিতে নেই এটা অপপ্রচার।’
গতবছর রাজনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য দুই নেত্রীকে একটেবিলে বসার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন নাজমুল হুদা। দুই নেত্রী একটেবিলে না বসায় ৬ জুন ২০১২ সালে পদত্যাগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে নাজমুল হুদা বলেন, ‘আমি পদত্যাগ পত্র পাঠালেও তা গৃহীত হয়নি। তাই আমি এখনো বিএনপিতেই আছি। ম্যাডাম আমাকে যেদিন ডাকবেন, সেদিনই আমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ছুটে যাবো।’
২০১২ সালের ৬ জুন বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে তিনি বিএনপির আদর্শে নতুন দল গঠনেরও ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট- বিএনএফ গঠন করেন।
তবে বিএনএফ গঠনের পর এর বিলুপ্তি ঘোষণা এবং আবার চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে কঠোর সমালোচনার মুখোমুখী হন তিনি।
উল্লেখ্য, বিএনপি ও দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মন্তব্য করে সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে গণমাধ্যমে দলের স্বার্থ ও শৃঙ্খলাবিরোধী বক্তব্য রাখার দায়ে নাজমুল হুদাকে ২০১০ সালের ২১ নভেম্বর বহিষ্কার করা হয়। ২০১১ সালের এপ্রিল তাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেয়া হয়।