লকডাউনের পঞ্চম দিনে আজ সোমবার সিলেট নগরে বেড়েছে লোকজনের চলাচল। সকাল থেকে নগরের বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় ছিল দীর্ঘ সারি। বাজারগুলোতে ছিল ভিড়। বাজারে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব। তবে নগরের বিভিন্ন মোড়ে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতাও দেখা গেছে। সকাল নয়টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়েছে।
সরেজমিন নগরের বন্দরবাজার, সোবহানীঘাট, কাজীরবাজার, মিরবক্সটুলা, আম্বরখানা, রিকাবীবাজার, মদিনা মার্কেট, ধোপাদীঘির পার, লালবাজার, কালীঘাট, মহাজনপট্টি, মীরাবাজার, শাহজালাল উপশহর এলাকায় মানুষের ভিড় দেখা যায়। বিভিন্ন ব্যাংকের সামনে ও ভেতরে গ্রাহকদের লম্বা সারি ছিল।
নগরের কাজীরবাজার পাইকারি মাছের বাজারে আসা বেশির ভাগ ক্রেতার মুখে মাস্ক থাকলেও বিক্রেতাদের অধিকাংশই মাস্কহীন ছিলেন। ভিড়ের মধ্যেও মাছ নিলামের স্থানগুলোতে আলাদা করে মানুষের জটলা চোখে পড়েছে। বিক্রেতা রাজিক মিয়া বলেন, মাছের বাজারে ভিড় সব সময়ই থাকে। তবে আগের তুলনায় ক্রেতা কম।
বেলা ১১টার দিকে নগরের জিন্দাবাজার এলাকার জনতা ব্যাংকে মানুষের জটলা চোখে পড়ে। সারি করে দাঁড়িয়ে ছিলেন গ্রাহকেরা। সিঁড়িতে যাঁরা দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদের অধিকাংশ এসেছেন বিদেশ থেকে স্বজনদের পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থ তুলতে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রিপন আহমদ বলেন, সামনে কোরবানির জন্য যুক্তরাজ্য থেকে বড় ভাই কিছু টাকা পাঠিয়েছেন। কয়েক দিন ব্যাংক বন্ধ থাকায় তা তুলতে পারেননি। আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ব্যাংকে এসে দেখেন দীর্ঘ লাইন দাঁড়ান।
একই চিত্র দেখা গেছে শাহজালাল (রহ.) দরগাহ্ মাজারের সামনের পূবালী ব্যাংকের শাখায়। অন্য দিনের মতো আজও নগরের বিভিন্ন এলাকায় ও শহরের প্রবেশমুখগুলোতে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে যানবাহন থামাতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া ও যাত্রী যানবাহনে পরিবহন করায় জরিমানা ও মামলা করেছেন ট্রাফিক সার্জেন্টরা। নগরের বিভিন্ন এলাকায় সাইরেন বাজিয়ে টহল দিতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।
নগরের শাহজালাল উপশহর এলাকার জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) কার্যালয়ে করোনা টিকার নিবন্ধনের জন্য প্রবাসীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া নিবন্ধনের চতুর্থ দিনে প্রবাসীদের ভিড় আরও বেড়েছে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (গণমাধ্যম) শামমা লাবিবা বলেন, সিলেট মহানগর ও জেলায় কঠোর লকডাউন পালন ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করতে ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন। কোর্ট পরিচালনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন।