জনসমাগম নেই। যানবাহনের দৌরাত্মও নেই সড়কে। মোটরসাইকেলে করে অনেকে চলাচল করলেও জেরার মুখোমুখি হচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত, সেনাবাহিনী, র্যাব-পুলিশের।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল থেকে ‘কঠোর লকডাউনে’ সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে এমন চিত্র দেখা গেছে।
‘লকডাউনে’ রেস্তোরাঁ খোলা রাখায় তিন ব্যবসায়ীকে গুনতে হয়েছে জরিমানা।
করোনা থেকে মানুষকে সুরক্ষায় ‘লকডাউন’ বাস্তবায়নে এমন হার্ডলাইনে প্রশাসন।
মহানগর ও প্রতিটি উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দখলে নগর শহরের সড়ক ও অলিগলি।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সেনাবাহিনীর একটি প্লাটুন পাঁচটি গ্রুপে ভাগ হয়ে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে টহলে বের হয়।
প্রতিটি টিমের সঙ্গে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। সেইসঙ্গে র্যাব-৯ এর টহল টিম নগরে চষে বেড়াচ্ছে। পুলিশের সদস্যরা বিভিন্ন পয়েন্টে চৌকি বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (সাধারণ কোভিড-১৯ মিডিয়া সেল) বলেন, মহানগর এলাকায় চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে। সেইসঙ্গে সেনাবাহিনীর টিমের সঙ্গে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। আর উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও ও এসিল্যান্ডের তত্ত্বাবধানে দু’টি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত ‘কঠোর লকডাউন’ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বি এম আশরাফ উল্যাহ বলেন, ‘লকডাউন’ কঠোরভাবে বাস্তবায়নে নগরের ছয়টি প্রবেশদ্বারসহ অভ্যন্তরের প্রতিটি পয়েন্টে চৌকি বসানো হয়েছে। মানুষকে ঘরে রাখতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এরপরও বিনা প্রয়োজনে কেউ ঘর থেকে বেরিয়ে এলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সবাইকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি। তাছাড়া নিত্যপণ্যের দোকান ও রেস্তোরাঁগুলো খোলা রাখার জন্য নির্দিষ্ট সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের অভ্যন্তরে ও কিংবা দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নগরের ব্যস্ততম কোর্ট পয়েন্টও ফাঁকা। সুরমা পয়েন্টেও গাড়ি নেই। জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, বন্দরবাজার, টিলাগড়, আম্বরখানা, দক্ষিণ সুরমার কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায়ও সুনসান নিরবতা বিরাজ করছে। অথচ যানবাহনের জট লেগেই থাকতো সেখানে।
করোনা থেকে মানুষকে সুরক্ষায় দেশব্যাপী সাত দিনের ‘কঠোর লকডাউনের’ প্রথম দিন কঠোর তৎপরতা দেখাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষকেও জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে। অবশেষে তাদের চলতে দিতে দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সতর্ক করে দিতে দেখা গেছে।
সেইসঙ্গে পণ্যবাহী যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহন বিনা বাধায় চলতে দেখা গেছে। তবে নগরের অলিগলি, সড়কের পাশে বসা চা দোকানগুলোতে মানুষের জটলা দেখা গেছে। যদিও সেসব স্থানগুলো প্রশাসনের নজরে আসেনি মনে করছেন অনেকে।