ব্রেকিং নিউজ
Home / সিলেট / সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বন্যার আশঙ্কা

সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বন্যার আশঙ্কা

 

কয়েক দিনের বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুরসহ বেশকিছু এলাকা বুধবার (৩০ জুন) প্লাবিত হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে প্লাবিত এলাকার মানুষ। বৃষ্টিতে বেড়ে যাওয়া নদ-নদীর পানি বৃহস্পতিবার (০১ জুলাই) সকাল থেকে নামতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড। পাশাপাশি সিলেট সব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানানো হয়।

এদিকে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আঘাত হেনেছে ধলাই তীরবর্তী চাঁনপুর গ্রামে। গত মঙ্গলবার ভোরে আকস্মিক ঢলে গ্রামের ১০ পরিবারের বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তারা পার্শ্ববর্তী ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এ নিয়ে গত চার বছরে গ্রামটির ৩০ পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়েছেন। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আরও ১৯০টি পরিবার।

কোম্পানীগঞ্জের পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. বাবুল মিয়া বলেন, ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা খরস্রোতা নদী ধলাই। কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ দিয়ে প্রবাহিত এই নদীর পাড় ঘেঁষা গ্রাম চাঁনপুর। গ্রামে প্রায় এক হাজার লোকের বসবাস। সবাই কৃষিজীবী। বংশ পরম্পরায় কৃষিকে উপজীব্য করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কয়েক বছর ধরে পাহাড়ি ঢলে নদীভাঙনের কারণে গ্রামটি নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এর মধ্যেই নতুন করে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি ভেঙে দিলো আরও ১০টি পরিবারের স্বপ্ন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য বলেন, বুধবার ভাঙনকবলিত চাঁনপুর গ্রাম পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে। যারা বাড়িঘর হারিয়েছেন তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভাঙন রোধেও কাজ করে যাচ্ছি। গ্রামটিকে রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডেও চিঠি পাঠিয়েছি। তাছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুর্গত এলাকার লোকজনের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান বলেন, সিলেটের সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় যেসব এলাকা প্লাবিত হয়েছিল; সেসব এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।

সিলেট আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, সাধারণত জুন মাসের স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাত হয়েছে এবার। বছরের হিসেবেও বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ১ হাজার ৯৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার কথা সিলেটে। কিন্তু জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে এক হাজার ২৬৪ মিলিমিটার।

সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা শফিক উদ্দিন আহমদ বলেন, সিলেটের যেসব উপজেলায় টাকা বিতরণ করা হচ্ছে; এগুলো করোনা ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া। সিলেট জেলায় এখনও বন্যায় দেখা দেয়নি। আমরা বন্যা দেখা দিলে ত্রাণ বিতরণের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।