প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্ক করেছিলেন এক কলেজ শিক্ষক। একপর্যায়ে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। এরইমধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে আত্মহত্যার প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেন তরুণী। বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত উদ্যোগ নেয় পুলিশ। পরে ওই কলেজ শিক্ষক তরুণীকে বিয়ে করতে বাধ্য হন।
পুলিশ সদর দফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত রাতেই সুইসাইড নোট লিখেছিলাম, হয়তো রাতেই কিছু করে ফেলতাম। আপনাদের মেসেজ পেয়ে ভরসা পেয়েছি।’ মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকে লিখেছেন এক তরুণী। তিনি পুলিশকে লিখেছিলেন, তার সঙ্গে এক যুবকের বহু দিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ছেলে কলেজ শিক্ষক। বিয়ের আশ্বাসে তারা অনেক গভীরভাবে মিশেছেন। যুবকের ইচ্ছায় তিনি গর্ভপাত করাতেও বাধ্য হয়েছেন।
তাদের সম্পর্কের বিষয়টি এলাকার সবাই জেনে গেছে। এখন ছেলেটি তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করছে। কোনও মূল্যেই সে বিয়ে করবে না। ছেলের পরিবারও মেনে নিবে না। এলাকার গণ্যমান্য অনেকের শরণাপন্ন হয়েছেন। প্রভাবশালী হওয়ায় ছেলের পরিবার কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না। বিয়ে করছি করবো বলেও পেরিয়েছে অনেক বছর। স্থানীয়ভাবে কোনও সমাধান বা বিচার পাননি তিনি। এতে হতাশ হয়ে পড়েন। আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
এই সময়েই এক পরিচিতজনের পরামর্শে পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে লিখেন তিনি। জানান, তিনি বাঁচতে চান। চান সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে। মিডিয়া উইং প্রাথমিকভাবে তার পাশে থাকার আশ্বাস দেয়। তাকে ইতিবাচক চিন্তা করতে উৎসাহ দেয়। নানাভাবে তাকে কাউন্সিলিং করে। পাশাপাশি কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার ওসি মো. রওশন কবিরকে নির্দেশনা দেয় বিষয়টি ভালোভাবে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে উপযুক্ত আইনি সহায়তা দিতে। সার্কেল এএসপি মো. সুমন রেজাকে পরামর্শ দেয় বিষয়টি তদারকি করতে।
নাগেশ্বরী থানার ওসি’র প্রচেষ্টা এবং সার্কেল এএসপি’র তত্ত্বাবধানে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের পথ সুগম হয়। এলাকার চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উদ্যোগে ও উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন ওই তরুণী ও কলেজ শিক্ষক। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং সতর্ক এবং সচেষ্ট ছিল যেন উভয় পক্ষের মধ্যে সব ধরনের ভুল বোঝাবুঝি দূর করে একটি আত্ম-উপলব্ধি ও সুসম্পর্কের মধ্য দিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হয়। পুরো প্রক্রিয়ায় এসপি কুড়িগ্রাম সার্বিকভাবে পাশে ছিলেন।
পরে সেই তরুণী পুলিশকে লিখেছেন, ‘মহান আল্লাহর দরবারে শত কোটি শুকরিয়া। আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা এখন স্বামী-স্ত্রী। আল্লাহ আমার সঙ্গে কোনও অন্যায় হতে দেননি। আর এতকিছু সব সম্ভব হয়েছে শুধু আপনাদের জন্য।’
London Bangla A Force for the community…
