ইসরায়েলি হামলায় ঘরবাড়ি ছেড়ে গাজায় জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে ত্রাণসহায়তা। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার পাঠানো ত্রাণ পৌঁছেও গেছে ওই এলাকায়। তবে ইসরায়েলি বাহিনী সীমান্ত খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার আটকে দেওয়ায় ত্রাণবাহী ট্রাকের বহর আর
সেখানে ঢুকতে পারছে না। আল–জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কো–অর্ডিনেটর অব গভর্নমেন্ট অ্যাক্টিভিটিজ ইন দ্য টেরিটোরিজ (কোগাট) মঙ্গলবার ত্রাণ নেওয়ার জন্য সাময়িকভাবে কারেম আবু সালেম সীমান্ত খোলার ঘোষণা দেয়। এরপর সেখান দিয়ে ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরেই মর্টার হামলায় এক ইসরায়েলি সেনা সামান্য আহত হওয়ার কথা জানিয়ে সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।
কোগাটের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কারেম সালেম ক্রসিংয়ের দিকে মর্টার বোমা হামলার পর বাকি ট্রাকগুলোর প্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
এর আগে নরওয়েজিয়ান রিফুজি কাউন্সিলের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মিডিয়া উপদেষ্টা কার্ল স্কেমব্রি আল–জাজিরাকে বলেছিলেন, কারেম আবু সালেম ও বেইত হ্যানুন ক্রসিং বন্ধ রাখা হলে গাজার ‘শ্বাসবন্ধ হওয়ার’ অবস্থা হবে। লোকগুলোর শুধু নিত্য ব্যবহার্য জিনিসই দরকার না, তাদের এখন জরুরি মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। সীমান্তগুলো খোলা রাখা খুবই দরকার।
এ ছাড়া অসহায় লোকগুলোর কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য অস্ত্রবিরতি দরকার বলেও উল্লেখ করেন কার্ল স্কেমব্রি।
জাতিসংঘের সহায়তা সংস্থা মঙ্গলবার জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৪৫০টি ভবন ধ্বংস বা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৫২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে প্রায় ৪৭ হাজার মানুষ গাজায় জাতিসংঘ পরিচালিত ৫৮টি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণসহায়তাবিষয়ক সমন্বয়ক জেনস লায়েরকে জানিয়েছেন।
জেনস লায়েরকে জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেছেন, ১৩২টি ভবন ধ্বংস এবং ৩১৬টি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি হাসপাতাল, নয়টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশাপাশি পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট রয়েছে। এতে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের পানীয় জলের সংকটের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
ঘরবাড়ি ছেড়ে স্কুলগুলোতে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলোর জন্য চিকিৎসা সরঞ্জামেরও তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস জানিয়েছেন।
লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গাজার আবাসিক ভবনগুলোতে ইসরায়েলি বিমান হামলার তদন্ত দাবি করেছে। অ্যামনেস্টি বলেছে, পূর্বসতর্কতা ছাড়া আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণহানির চারটি ঘটনার চিত্র ধারণ করেছে।
এক সপ্তাহ ধরে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৩৩ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬১টি শিশুও রয়েছে।
London Bangla A Force for the community…
